সদস্যদের অর্ধকোটি টাকা নিয়ে এনজিও উধাও

আব্দুল্লাহ আল মহসীন।।
কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলা সদর থেকে রাতের আঁধারে অফিস গুটিয়ে সমিতির সদস্যদের সঞ্চয়ের প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিয়ে একটি এনজিও উধাও হয়ে গেছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি সমিতির সদস্যরা উপজেলার ষাইটধার অফিসে ঋণ নিতে এসে দেখতে পান এনজিওর লোকজন নেই। চেয়ার-টেবিল, আসবাবপত্র অফিস থেকে উধাও। এ সময় সমিতির সদস্যদেরকে নতুন করে ঋণ দেয়ার কথা ছিলো।
প্রতারক এনজিও গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা (ভিডিএস)-এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেখতে না পেয়ে সদস্যদের মাথায় হাত পড়েছে। গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা (ভিডিএস) নামে এনজিওটি ২০০৩ সালে এডিআইপি প্রকল্পের অধীনে নিকলী উপজেলায় তাদের কার্যক্রম শুরু করে। প্রকল্প শেষে এনজিওটি নিজস্ব উদ্যোগে ুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলো। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ৫০টি সমিতি গড়ে তোলে। সমিতির সদস্য সংখ্যা প্রায় ১ হাজার। সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে নিয়মিত সঞ্চয় আদায়ের পরও এনজিওটির মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির অনুমোদন না পাওয়া সত্ত্বেও বিষয়টি গোপন রেখে উপজেলাব্যাপী ুদ্রঋণ কার্যক্রম শুরু করে। বেশ কিছু দিন ধরে গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা (ভিডিএস)-এর লোকজন অধিক পরিমাণে নতুন করে ঋণ দেয়ার কথা বলে সমিতির সকল সদস্যের কাছ থেকে পুরাতন সকল ঋণ আদায় করে নেয়। এমনকি সদস্য সঞ্চয় জমাদানের পাস বইটিও সুকৌশলে নিজেদের কব্জায় নেয়।
নিকলী সদর ইউনিয়নের দর্গাহাটি গ্রামের শাপলা সমিতির সভাপতি হোসনা বেগম প্রতিনিধিকে জানান, আমার কানের দুল বন্ধক রেখে ১৩ হাজার টাকা সঞ্চয় দিই বেশি টাকা ঋণ পাওয়ার আশায়। একই সমিতির সদস্য নূরজাহান জানান, আমি হাঁস-মুরগী বিক্রি করে ৫ হাজার টাকা সঞ্চয় দিই। সদস্য মঞ্জিলা খাতুন জানান, আমি ছাগল বিক্রি করে ৭ হাজার টাকা সঞ্চয় দিই। ৮ ফেব্রুয়ারি রোববার সকালে ঋণ আনতে গিয়ে দেখি অফিসে তালা ঝুলছে।
উপজেলার দামপাড়া ইউনিয়নের দামপাড়া বাজার আনন্দ পুরুষ সমিতির সদস্য বাদল জানান, ৮ ফেব্রুয়ারি আমাকে ঋণ দেয়ার কথা। আমি ৮ হাজার টাকা সঞ্চয় দিই। পাস বইটি পর্যন্ত গ্রাম উন্নয়ন সংস্থার লোকজন নিয়ে যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দামপাড়া নয়াহাটি, জারইতলা ইউনিয়নের সাজনপুর, রোদার পুড্ডা, কারপাশা ইউনিয়নের সহরমূল, নিকলী সদর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের বিভিন্ন সমিতির সদস্যদের প্রায় অর্ধকোটি টাকা এনজিওটির কাছে সঞ্চয় রাখা হয়েছিল। গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা (ভিডিএস)-এর পাস বইয়ে বনুয়াপাড়া, আটপাড়া, নেত্রকোনা প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা লেখা রয়েছে। নিকলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাহবুব আলম জানান, এনজিওটি গত ৫ ফেব্রুয়ারি ুদ্রঋণ কার্যক্রম বন্ধের আবেদন করে। তবে টাকা আত্মসাতের ব্যাপারে লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!