কারপাশায় নৌকা পারাপারের তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষে আহত ১

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

নিকলী উপজেলার কারপাশা ইউনিয়নের গৌরিপুরে ৫ জুলাই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দিপু নামে একজন গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা যায়, ৪ জুলাই বিকালে খাল পারাপারের জন্য ব্যবহৃত গুদারায় (নৌকা) করে দুইজনের টানাটানিতে দেরি হয়। এতে একজনকে মাসুদের বাবা (দিপুর দাদা) অপর বাচ্চাকে ধমক দেন। আর দিপুর দাদার এই ধমক দেয়ার বিষয়টিই কাল হয়ে দাঁড়াল দিপুর।

৫ জুলাই সকালে নিত্যদিনের মতো কারপাশার হারিছের বাড়ির পাশ দিয়ে দোকানে যাওয়ার পথে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হারিছ ও তার ছেলেরা হামলা করে দিপুকে। এ সময় দিপুর হাত থেকে স্বর্ণ ও রূপা থাকা পানের কৌটাটি কেড়ে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল বারবারই। ভয়-ভীতিতেও কাজ না হওয়ায় হারিছ তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে আঘাত করে দিপুর মাথায়। লুটিয়ে পড়ে দিপু। পরবর্তীতে হারিছের ছেলেরা রড ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। নিয়ে যায় দিপুর কাছে থাকা স্বর্ণ, রূপা ও নগদ পঁচাত্তর হাজার টাকা। অভিযোগ আহত দিপুর পরিবারের।

পরবর্তীতে এলাকার লোকজন এগিয়ে এসে তাকে রক্ষা করলেও স্বর্ণ, রূপা ও নগদ টাকার কিছুই পায়নি। অসুস্থ দিপুকে নিয়ে যাওয়া হয় নিকলী সদর হাসপাতালে। তার জখম মারাত্মক বিবেচনায় চিকিৎসা নিকলীতে সম্ভব না হওয়ায় ডাক্তাররা পাঠিয়ে দেন জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, ভাগলপুর। সেখানেও ডাক্তাররা অপারগতা প্রকাশ করে তাকে দ্রুত ও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠাতে বলেন।

সে মোতাবেক ৫ জুলাই রাতেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় দিপুকে। ৬ জুলাই জরুরি বিভাগে তাকে ভর্তি করিয়ে একটি বোর্ড গঠন করে অপারেশন করা হয়। ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে ১০০ নম্বর ওয়ার্ডের বি-৩ নং বেডে সে চিকিৎসাধীন আছে।

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলতে চাইলে কেউই মুখ খুলতে চায়নি। তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেছেন, হামলাকারীদের বিচার হওয়া জরুরি। তারা প্রায়ই এরকম ঘটনা ঘটায়। এবারও যদি বিচার না হয় তাহলে এলাকায় আরো এমন ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।

অপরদিকে এসব অভিযোগ শোনার পর মোঃ হারিছ মোবাইলে জানান, ঘটনাটি যদিও আমার বাড়ির পাশে ঘটেছে কিন্তু তারা (দিপুর পরিবার) বেশ কয়েকজন মিলে আমাদের বাড়িতে আক্রমণ করে। আর আমরা বাড়িতে টিকতে না পেরে তাদের আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা করি। দিপুদের দলের (দিপুর বাবা মাসুদের) লোকদের দা’য়ের আঘাতেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। মাসুদ সার্বক্ষণিক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকে। মাসুদের এই নেশাগ্রস্ততার জন্য তার মা এক সময় (মেম্বার থাকাকালীন সময়ে) তাকে জেলেও পাঠান। আমাদের সম্পর্কে আপনি প্রয়োজনে থানায় খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন আমার বা আমাদের নামে কোনো জিডি পর্যন্ত আছে কি না। প্রয়োজনে এলাকার চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করে দেখতে পারেন।

কথা হয় কারপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ত্বকী আমান খানের সাথে। তিনি বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে আমি শুনেছি এবং দিপুকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় যদিও মামলা হয়েছে তবুও বিষয়টি সামাজিকভাবে বা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা যায় কি না সে চেষ্টা করছি। হারিছকে আমি ব্যক্তিগতভাবে ভাল চিনি না। তবে আমি যতদূর শুনেছি আগে এমন থাকলেও এখন তার অনেক পরিবর্তন হয়েছে।

Similar Posts

error: Content is protected !!