দৃষ্টিহীনতায় বাধা মানেনি মোশারফ

আবদুল্লাহ আল মহসিন ।।

দৃষ্টিহীনতায় বাধা মানেনি মোশারফ। চোখ না থাকলে কি হবে মনের চোখে দেখা স্বপ্ন আর অদম্য ইচ্চা আত্মবিশ্বাসে আজ সে সফল শিক্ষক। কিশোরগন্জ জেলার নিকলী উপজেলার বড়পুকুর পার গ্রামের আঃ মান্নানের ছেলে মোশারফ। ২ভাই ৩ বোনের মাঝে সে তৃতীয়। জন্মসময়ে তার দুটি চোখ ভাল থাকলেও চার বছর বয়সে হামে আক্রান্ত হয়ে সে আজ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। পরিবারের সবার পড়ার ব্যবস্থা থাকলেও তাকে কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি কারন আশে পাশে কোথাও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। ভেঙ্গে পড়েনি সে। মনের ভেতরে পড়ার আগ্রহ একটিবাড়ের জন্য ও শেষ হয়ে যায়নি। অবশেষে ১৯৯৯ সালে তাকে ভর্তি করা হয় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আল মারকাজুল ইসলামী ঢাকা মুহাম্মদ পুরে। সেখানে ব্রেইল পদ্বতিতে ৫ বছরে কুরআন শরিফ মুখস্ত করে। তার জীবনের সফলতার শুরু এর মাধ্যমেই। ২০০৮সালে তা টঙ্গী গাজীপুর সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে কুটির শিল্পের প্রশিক্ষণ নেয়। কিন্তু শিক্ষার প্রতি তার আগ্রহ ছিল বেশি এজন্য শিক্ষকতার মাধ্যমেই সে পেশাগত কর্মে প্রবেশ করে২০০৯ সালে। প্রথম কর্মস্থল বগুরা মতিঝিল অন্ধ হাফিজিয়া মাদ্রাসা।

সেখানে লেখাপড়ার আগ্রহ আরোবৃদ্বি পায় এজন্য বগুরা গর্ভমেন্টস্কুলের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শাখায় ভর্তি হয়ে বাংলা শেখে। কখনো অডিও রেকর্ড থেকে ও শেখে। নিয়মিত রেডিওর সংবাদ ও পোগ্রাম শুনেও শিক্ষার পরিধি বাড়িয়ে চলছে বগুরা গর্ভমেন্ট স্কুলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শাখায় বাংলা ও শেখে, তারপর ২০১৩ সালে ঢাকা মুহাম্মদপুর আলমারকাজুল ইসলামী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন। এখন সেখানে ১৮ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছাত্রদের হেফজ পড়ান। ২০১৩ সালে তার হজে যাওয়ার সুযোগ হয়। ১বছর আগে বিয়ে করে শিক্ষকতার আয় দিয়ে নিজের সংসার চালান। মোসারফ জানান, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা সবচেয়ে অসহায়। তাদের শিক্ষা ও আর্থিক সুবিধা সরকারী ভাবে বাড়ানো উচিত। সে আরো বলেন,নিকলী উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে প্রতিবন্ধী তালিকায় আমার নাম তালিকাভূক্ত নেই। আমি প্রতিবন্ধী তালিকাভূক্ত হয়ে সরকারী সুযোগ পেতে আশা করছি।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!