আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
নিষিদ্ধ কয়েকটি ওষুধ উদ্ভাবনের সঙ্গে জার্মানদের নাম জড়িয়ে আছে। ছবিঘরে থাকছে সেগুলোর কথা।
প্যার্ভিটিন
এটি খেলে মানুষের মনে ভয় ঢুকতে পারে না। এছাড়া মানুষের মধ্যে মনোযোগের ক্ষমতাও বাড়ায় প্যার্ভিটিন। জাপানি এক কেমিস্ট তরল আকারে এটি তৈরি করলেও, জার্মানির টেমলার কোম্পানি ওষুধটির মান উন্নয়ন করে ১৯৩৭ সালে এর পেটেন্ট নেয়। পরের বছর থেকে বিক্রি শুরু হয়। এখনও তা বলবৎ আছে, তবে অবৈধভাবে এবং অন্য নামে, ক্রিস্টাস মেথ।
‘মিরাকল পিল’
প্যার্ভিটিনের গুণের কারণে নাৎসি সেনাদের কাছে এটি ‘মিরাকল পিল’ নামে পরিচিত ছিল। ১৯৩৯ সালে পোল্যান্ডে আর পরের বছর ফ্রান্সে নাৎসিরা যে সৈন্য পাঠিয়েছিল, তাদেরকে প্যার্ভিটিন দেয়া হয়েছিল। জানা যায়, ফ্রান্স দখলের সময় নাৎসি শাসক সৈন্যদের প্রায় ৩৫ মিলিয়ন প্যার্ভিটিন ট্যাবলেট দিয়েছিল।
হিটলার নিজেও?
তিনিও প্যার্ভিটিনে আসক্ত ছিলে কিনা, তা নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে বিতর্ক আছে। হিটলারের ব্যক্তিগত চিকিৎসক টেও মোরেল-এর কাগজপত্রে একটি ওষুধের পাশে ‘X’ চিহ্নের উপস্থিতি এই বিতর্কের কারণ। তবে এই বিষয়টিতে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও হিটলার যে নিয়মিত শক্তিশালী ওষুধ সেবন করতেন, সেটা জানা গেছে।
হেরোইন
ঊনিশ শতকের শেষ দিকে জার্মানির বিশ্বখ্যাত ওষুধ কোম্পানি বায়ার-এর একটি বিজ্ঞাপনের স্লোগান ছিল, ‘‘কাশি নেই, ধন্যবাদ হেরোইনকে।’’ বুঝতেই পারছেন চিকিৎসকরা সেই সময় রোগীদের এটি খাওয়ার পরামর্শ দিতেন। মৃগী রোগ, অ্যাজমা, সিজোফ্রেনিয়া ও হৃদরোগের চিকিৎসায় শিশু ও বয়স্কদের হেরোইন দেয়া হতো। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে শুধুমাত্র কোষ্ঠকাঠিন্যতার কথা বলতো বায়ার।
হেরোইনের উদ্ভাবক
ছবির এই মানুষটির নাম ফেলিক্স হোফমান। হেরোইনের উদ্ভাবক তিনি। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় বোধ হয়, তিনি অ্যাসপিরিন-এর জনক। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত কিন্তু জার্মানিতে হেরোইন সেবন বৈধ ছিল।
কোকেন
দক্ষিণ অ্যামেরিকার কোকা পাতায় ক্ষারজাতীয় একটি রাসায়নিক উপাদান খুঁজে পেয়েছিলেন জার্মান কেমিস্ট আলবার্ট নিমান। এর নাম তিনি দিয়েছিলেন কোকেন। সংক্ষেপে জার্মানরা কোকেনকে বলে ‘কোক’। তাই ইউরোপে কেউ আপনাকে কোক সেবন করেন কিনা জানতে চাইলে কোকাকোলা নয়, কোকেনের কথা বলছে বলে বুঝতে হবে কিন্তু!
প্রফুল্লভাব এনে দেয়?
অস্ট্রিয়ান নিউরোলজিস্ট ও সাইকোঅ্যানালিসিস-এর জনক সিগমুন্ড ফ্রয়েড গবেষণার উদ্দেশ্যে কোকেন সেবন করেছিলেন। এরপর তিনি বলেছিলেন, কোকেন ক্ষতিকারক নয়। কোকেন খেলে মন প্রফুল্ল হয়ে ওঠে, এমনও বলেছিলেন তিনি। অবশ্য কোকেন নিয়ে ফ্রয়েডের এই ইতিবাচক ভাব বেশি দিন থাকেনি। কারণ তাঁর এক বন্ধু অতিমাত্রায় কোকেন নেয়ায় প্রাণ হারিয়েছিলেন।
এক্সটাসি
মার্কিন কেমিস্ট আলেক্সান্ডার শুলগিন-কে ‘পার্টি ড্রাগ’ বলে পরিচিত এক্সটাসি-র উদ্ভাবক মনে করা হলেও, জার্মান কোম্পানি ম্যার্ক সেই ১৯১২ সালেই এটি উদ্ভাবন করেছিল এবং ‘৩,৪-মিথাইলেন-ডিঅক্সি-মেথ-অ্যাম্ফেটামিন’ (এমডিএমএ) নামে বর্ণহীন এক তেলের পেটেন্ট নিয়েছিল। অবশ্য সেই সময় কেমিস্টরা মনে করেছিলেন যে, এর কোনো বাণিজ্যিক মূল্য নেই।
সূত্র : হেরোইন, কোকেনের উদ্ভাবক কে? জার্মানরা! [ডয়চে ভেলে, ১০ মে ২০১৬]