বিশেষ প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ ।।
কিশোরগঞ্জের হাওরে গত ফাল্গুন মাসে অকাল বন্যায় উঠতি বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কষ্টে বোনো ফসল হারিয়ে বেশিরভাগ কৃষক তখন গো-খাদ্যের অভাবে পানির দরে শেষ সম্বল গরুও বিক্রি করে দেয়। সেই ক্ষতির বোঝা এখনও টানতে হচ্ছে তাদের। সামনে কোরবানির ঈদ। কিন্তু কোরবানি দেয়ার মতো কৃষকের হাতে কোনো গরু নেই। তাছাড়া গরু কিনে কোরবানি দেয়ার মতো অবস্থায় নেই তারা। ফলে এবারের ঈদে গরু কোরবানি নিয়ে মহাসঙ্কটে পড়েছে তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যাদের গোয়ালে ১০টি গরু ছিল, তাদের গোয়ালে বর্তমানে কোনো গরু নেই। কারণ ফসল হারিয়ে গরু বিক্রি করে চলেছেন এতদিন। এমনিতেই কষ্টে দিন কাটছে তাদের, গোয়ালে গরু থাকলে, সেখান থেকে একটি গরু কোরবানি দিতে পারতেন তারা। তাই কোরবানির চিন্তা অনেকের মাথায় নেই।
মিঠামইনের খলাপাড়া গ্রামের কৃষক সফর আলী জানান, তিনি ১৫ একর জমি বোরো চাষ করেছিলেন। এক শতক জমির ধানও কাটতে পারেনি তিনি। তার হালের বলদসহ ১০টি গরু ওই সময় গো-খাদ্যের অভাবে মাত্র দুই লাখ টাকায় বেচে দিয়েছিলন। বর্তমানে যার দাম পাঁচ লাখ টাকা। তিনি বলেন, গোয়ালে কোরবানি দেয়ার মতো গরু নেই। কিনে কোরবানি দেয়ার মতো টাকাও নেই হাতে। তাই এবার আর কোরবানি দেয়া হবে না।
শুধু সফর আলী নন, তার মতো বড় কৃষকরাও এ ঈদে কোরবানি দিতে পারবেন না। আর গরিব কৃষকদের অবস্থা তো আরো করুণ। তারা প্রতিবছর ঈদের সময় যে কোরবানির মাংস পেতেন, তা-ও এবার পাবেন না বলে জানালেন কয়েকজন।
ঘাগড়া গ্রামের কয়েকজন জানান, বন্যার পর সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতার ওপর নির্ভর করে জীবন-যাপন করতে হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত বেশিরভাগ কৃষকদের। তাই কোরবানি দেয়ার মতো টাকা তাদের হাতে নেই।
ঘাগড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, শুধুমাত্র ঘাগড়া ইউনিয়নে গত কোরবানি ঈদে পাঁচ শতাধিক পশু কোরবানি দেয়া হয়েছিল। এ ঈদে ৫০টি কোরবানি হয় কি-না সন্দেহ রয়েছে।