ইতিহাস গড়া কাঠের জাহাজ ফ্রাম

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

‘ফ্রাম’ নামে ওক গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি একটি জাহাজকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কাঠের জাহাজ’ বলা হয়। কারণ এটা দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর সবচেয়ে দূরবর্তী স্থানে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। কাঠের তৈরি অন্য কোনো বাহন দিয়ে যেটা সম্ভব হয়নি।

‘ফ্রাম’ বা ফরোয়ার্ড
ওক কাঠ দিয়ে তৈরি জাহাজটির নাম ‘ফ্রাম’ – যার অর্থ ফরোয়ার্ড বা অগ্রসর। ৩৯ মিটার দীর্ঘ ও ১১ মিটার প্রস্থের এই জাহাজকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কাঠের জাহাজ’ বলা হয়। কারণ এটা দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর সবচেয়ে দূরবর্তী স্থানে যাওয়া সম্ভব হয়েছে।

পেছনের কারিগর
ফ্রিটইওফ নানজেন নামের ছবির এই মানুষটিই ছিলেন ‘ফ্রাম’ তৈরির মূল উদ্যোক্তা। তাঁর ইচ্ছা ছিল এমন একটি জাহাজ তৈরির যেটা দিয়ে উত্তর মেরুর অনেক দূর যাওয়া যায় যে পর্যন্ত আগে কেউ যেতে পারেনি। নরওয়ের নাগরিক নানজেনের উদ্যোগে জাহাজটি তৈরি করেছিলেন কলিন আর্চার। নরওয়ের সরকারও এতে কিছু আর্থিক সহায়তা দিয়েছিল।

উত্তর মেরু অভিযান (১৮৯৩-১৮৯৬)
১৮৯৩ সালের ২৪ জুন থেকে ১৮৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর – এই তিন বছর উত্তর মেরুতে অভিযান করে ফ্রাম। এ সময় জাহাজটি উত্তর মেরুর ৮৫°৫৭’ পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছিল, যেখানে আগে কোনো কাঠের জাহাজ যেতে পারেনি। তাই ফ্রাম যখন অভিযান শেষে ফিরে আসে তখন নরওয়ের রাজা অভিযাত্রীদের অভ্যর্থনা জানান। ছবিটি অভিযান শুরুর সময়কার। নানজেন ছাড়াও অভিযাত্রী ছিলেন ১২ জন।

দক্ষিণ মেরু অভিযান (১৯১০-১৯১২)
নরওয়ের আরেক অভিযাত্রী রোয়াল্ড আমুন্ডসেন হলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছেছিলেন। তিনি তাঁর অভিযানেও ব্যবহার করেছিলেন ফ্রামকে। সেসময় ফ্রাম দক্ষিণ মেরুর ৭৮°৪১’ পর্যন্ত যেতে পেরেছিল। এটাও কাঠের তৈরি জাহাজের জন্য একটা রেকর্ড।

এখন স্থান জাদুঘরে
উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে ইতিহাস সৃষ্টিকারী ফ্রাম এর এখনকার অবস্থান নরওয়ের রাজধানী অসলোর ফ্রাম মিউজিয়ামে।

রান্নাঘর
এবার চলুন যাওয়া যাক সেই ঐতিহাসিক জাহাজের ভেতরে। এটি সেই জাহাজের রান্নাঘর।

খাবার
অভিযানের ফাঁকে একসাথে বসে খাবার খেয়ে নিচ্ছেন অভিযাত্রীরা।

বিনোদন
ঝড়, দুর্যোগ, প্রচণ্ড শীত, আইস– এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে জীবন যেন অতিষ্ট হয়ে না ওঠে সেজন্য বিনোদনেরও ব্যবস্থা ছিল ফ্রামে।

সূত্র : ইতিহাস গড়া কাঠের জাহাজ [ডয়চে ভেলে, ২৯ আগস্ট ২০১৩]

Similar Posts

error: Content is protected !!