আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
রানার কিংবা ডাক পিয়নের কাঁধে এখন আর থাকে না খবরের বোঝা। কেউ আর অপেক্ষায় থাকে না প্রিয়জনের চিঠির। তবু গ্রাম-শহরে এখনো মাঝেমধ্যে দেখা মেলে পিয়নের। সুখ-দুঃখের কথামালার ব্যক্তিগত চিঠি নয়, রেজিস্ট্রি চিঠি কিংবা পার্সেল তুলে দেন প্রাপকের হাতে।
শহর পেরিয়ে এখন প্রত্যন্ত গ্রামের খেটেখাওয়া মানুষের হাতেও পৌঁছে গেছে প্রযুক্তি। যোগাযোগ রক্ষায় প্রযুক্তি ব্যবহারের এই বিস্তৃতিই ধীরে ধীরে গ্রাস করেছে চিঠিকে।
ব্যক্তিগত চিঠির সংকট কেড়ে নিয়েছে পোস্ট অফিসগুলোর জৌলুস। নেই মানুষের আনাগোনা, নেই কর্মচাঞ্চল্য; ক্রমেই তীব্র হচ্ছে অস্তিত্ব সংকট।
একজন ডাকপিয়ন বলেন, ‘আগে মানুষ রাস্তাঘাটে দেখলেই জিজ্ঞাসা করত পিয়ন ভাই চিঠি কি আছে? এখন আর কেউ এমন জিজ্ঞাসা করে না। শুধু চাকরির চিঠি আসে এখন।’
আরেকজন নারী বলেন, ‘এখন তো মোবাইলের যুগ, মোবাইল দিয়েই সব যোগাযোগ হয়।’
পোস্ট অফিসে যান না দীর্ঘদিন, তবু পুরনো চিঠিগুলো ছুঁয়ে এখনো সুদূর অতীতে ফিরে যান অনেকেই। সাটুরিয়া পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘আগে দেখতাম দেশ বিদেশ থেকে আসা চিঠিপত্রের পাহাড় হয়ে যেত, বিলি করে শেষ করা যেত না। এখন আর তেমন হয় না।’
অনেকেই পরম মমতায় আগলে রেখেছেন পুরনো চিঠি। তাদের মতে, শুধু আবেগ, অনুভূতি আর ভালোবাসা নয়, চিঠির সাথে জড়িয়ে আছে সভ্য সমাজ বিনির্মাণের ইতিহাসও।
হয়তো ডাক পিয়নের হাতে চিঠি আসার দিন আর ফিরবে না কখনো। তবু পুরনো চিঠি ও চিঠি সংক্রান্ত সাহিত্যকর্মের মাধ্যমেই মানুষের হৃদয়ে বহুদিন বেঁচে থাকবে যোগাযোগের ঐতিহ্যবাহী এই মাধ্যমটির নাম।
সূত্র : ফুরিয়ে যাচ্ছে ডাকপিয়নের যুগ [সময় টিভি, ৯ অক্টোবর ২০১৭]