লিভার বা যকৃৎ এমন একটি অঙ্গ, যা শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় তার অবদান রেখে থাকে। অথচ মানুষ তার খাওয়া-দাওয়া এবং জীবনযাত্রার মাধ্যমে প্রায় অজান্তেই এই মহার্ঘ অঙ্গটির ক্ষতি করে থাকে, একেবারে প্রাণসংশয় অবধি। সম্প্রতি লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষায় দারুণ একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে ডয়েচ ভেলের পাতায়। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো :
ভাইটাল অর্গান
যকৃৎ বা লিভার মানুষ ও অন্যান্য মেরুদণ্ডী প্রাণীর শরীরে একটি অপরিহার্য অঙ্গ। শরীরে লিভার নানা ধরনের কাজ করে: বিষাক্ত পদার্থের দূরীকরণ থেকে শুরু করে প্রোটিন সিন্থেসিস। এছাড়া খাবার হজম করার জন্য প্রয়োজনীয় নানা ধরনের জৈব রাসায়নিক পদার্থ সৃষ্টি করে লিভার৷।
হেপাটাইটিস
জার্মানিতে প্রায় আধ কোটি মানুষ কোনো না কোনোরকম যকৃতের রোগে ভোগেন। তার মধ্যে প্রথমেই আসে হেপাটাইটিস বা লিভারের ইনফ্ল্যামেশন: যা সাধারণত এ, বি, সি, ডি এবং ই গোত্রীয় হয়। যদিও এগুলো ভাইরাস-বাহিত, তবুও কিছু কিছু ক্ষেত্রে যৌন সঙ্গম থেকেও সংক্রমণ ঘটতে পারে। হেপাটাইটিস বি ভাইরাস এবং হেপাটাইটিস সি ভাইরাস আবার লিভারের ক্যানসার হওয়ার প্রধান কারণ।
অ্যালকোহল
মাত্রাধিক মদ্যপান থেকে যে লিভারের ক্ষতি হয়, তা কারো অজানা নেই। ফ্যাটি লিভার এবং লিভার সিরোসিস যার মধ্যে পড়ে। সিরোসিস হলো যকৃতের রোগের একটা চূড়ান্ত রূপ। এ রোগে পেটের মধ্যে ফ্লুইড জমে, এছাড়া স্কার টিস্যু ও নডিউলস দেখা দেয়। সিরোসিস সারানো সম্ভব নয় এবং শেষমেষ লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট বা যকৃৎ প্রতিস্থাপন ছাড়া কোনো পথ থাকে না।
লক্ষণগুলো চেনেন কি?
লিভারের যে ক্ষতি হয়েছে বা অসুস্থ যকৃতের লক্ষণ হলো মলের রং পাতলা এবং মূত্রের রং ঘন হওয়া, জন্ডিস, পেট, পায়ের গোড়ালি এবং পা ফোলা, অতিমাত্রায় ক্লান্তি, সহজেই রক্ত পড়া এবং ক্ষত দেখা দেওয়া আর লিভারের ব্যথা।
মেদ ও তার পরিণাম
সারা বিশ্বে আজ প্রযুক্তি, সমৃদ্ধি এবং আধুনিক জীবনধারার কারণে মেদবহুল মানুষের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। অথচ শরীরে মাত্রাধিক মেদ থাকলে তা ডায়বেটিস থেকে শুরু করে হৃদরোগ এবং ফ্যাটি লিভারের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
লিভারের ক্ষতি এড়াতে
খাবারের দিকে খেয়াল রাখুন, হাঁটাচলা করুন – অর্থাৎ সাধারণভাবে সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাত্রা এক্ষেত্রেও একাধারে পথ্য এবং প্রতিষেধক। তবে যাঁদের যকৃতের রোগ আছে, তাঁদের সাধারণত প্রোটিন ও স্নেহ জাতীয় পদার্থ গ্রহণ কমাতে এবং কার্বোহাইড্রেট বাড়াতে বলা হয়।
লেখা সৌজন্য-ডয়েচ ভেলে