বিশেষ প্রতিনিধি ।।
তালাবপাড়। নিকলী সদর ইউনিয়নের একটি গ্রাম তালাবপাড় (পুকুর পাড়)। এ গ্রামটি একটি বড় পুকুরের তিন দিক জুড়ে অবস্থিত হওয়ায় এই গ্রামের নাম তালাবপাড় (পুকুরের উত্তর পাড়ের লোকজন উত্তর তালাবপাড়ের, দক্ষিণদিকের ওরা দক্ষিণ তালাবপাড়ের ও পূর্বদিকে বসবাসকারীগণ পূর্বতালাবপাড়ের হিসাবে পরিচিত)। আঞ্চলিক ভাষায় পুকুরকে তালাব বলে থাকে। আর এ থেকেই পুকুরের তিন পাড়ে বসবাসকারীদের গ্রামের নামই হয়ে যায় তালাবপাড়। বাড়ির পাশ ঘেঁষে ও পুকুরের একেবারে পাড় ঘেঁষে মানুষের চলাচলের রাস্তা। সুনির্দিষ্ট কোন রাস্তা না থাকায় এলাকায় বসবাসকারীদের চলাচলে খুবই অসুবিধা হত। বিশেষ করে বর্ষাকালে।
পরবর্তীতে এই গ্রামেরই বাসিন্দা মোঃ লিয়াকত আলী (২০০০-২০০১ সালের নির্বাচনে) মেম্বার নির্বাচিত হলে তার বাড়িতে যাতায়াত ও এলাকার লোকজনের চলাফেরার সুবিধার্থে রাস্তাটি ইটের সলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। এরপর আর কোন কাজ হয়নি এই রাস্তায়। তাই এলাকাবাসী এই রাস্তাটির সংস্কার চায়।
এখানে উল্লেখ্য যে, লিয়াকত আলী মেম্বার (সাবেক) দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ (প্যারালাইজড) হয়ে পূর্ব অভ্যাসবশত বাজারে যাতায়াত করেন। তখন রাস্তায় সমস্যা হলে তিনি রাস্তার ইটে তাঁর হাতে থাকা লাঠি দিয়ে মাঝে মাঝে বাড়ি দিয়ে কি যেন বুঝাতে চান। হয়ত তাঁর ভাষাও এই বলে যে, রাস্তাটি সংস্কার করা জরুরি।
গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, রাস্তার যে চিত্র তা কবে করা হয়েছিল সেটিও কেউ ঠিকঠাক বলতে পারেননি। তবে, কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘সম্ভবত লিয়াকত আলী মেম্বার হলে গ্রামের লোকজনের চলাচলের সুবিধার জন্য রাস্তাটা সলিং করা হয়েছিল। এরপর মেম্বার হয়েছিল এই গ্রামেরই মোঃ শাহজাহান মিয়া। পরবর্তী সময়ে শাহজাহান আলীরই আপন ছোট ভাই ও এই গ্রামেরই বাসিন্দা মোঃ সাইদুর রহমান। লিয়াকত আলী মেম্বার থাকাকালে করা রাস্তা পরপর আরও দু’টি আমল গিয়ে তৃতীয় আরেকটি আমল চলমান। বর্তমানে এই ওয়ার্ডের মেম্বার লিয়াকত আলী মেম্বারেরই চাচাত ছোট ভাই। কিন্তু সেই রাস্তার কোন উন্নতি হয়নি। বরং যা হয়েছে তা অবনতি। রাস্তাটি কেবলই পুকুরের পাড় ঘেঁষে হওয়ায় বাড়ির পানি রাস্তা পার হয়ে পুকুরে নামার সুবাদে রাস্তা দিন দিন কিছু কিছু করে ভেঙ্গেছে। এর আর মেরামত হয়নি।
এলাকাবাসীর প্রশ্ন, নিকলী সদর ইউনিয়নে অবস্থিত এই গ্রামে একজন মেম্বার বর্তমান থাকা অবস্থায় কেন রাস্তার এমন অবস্থা থাকবে? তাদের দাবি, চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি যেন দ্রুততার সাথে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মেরামতের ব্যবস্থা করা হয়। তারা নিকলীর অত্যন্ত জনপ্রিয়, তিন বারের নির্বাচিত প্রয়াত চেয়ারম্যান কারার বুরহান উদ্দিনের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলেন, তাঁর (কারার বুরহান উদ্দিন) সময়ে নিকলী সদরে অনেক উন্নতি সাধিত হয়েছে।
পিতার অসমাপ্ত কাজ ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার অঙ্গীকারে নির্বাচিত বর্তমান সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কারার শাহরিয়ার আহমেদ তুলিপের কাছে এলাকাবাসীর দাবি, গ্রামের রাস্তাটির মেরামত চাই; রাস্তাঘাটের উন্নতি ও সামাজিক যেসব উন্নতি পেয়েছিলাম তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন।