আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
গত চার নভেম্বর নিউজ হয়েছিল ‘শাকিব-অপুর বিচ্ছেদের গুঞ্জন’। সে কথাই সত্যি হলো। চিত্রনায়ক শাকিব খান অবশেষে তালাকনামা পাঠিয়েছেন অপু বিশ্বাসকে। দু’জনের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো খবরটির সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
শাকিব খান তার আইনজীবীর মাধ্যমে তিনদিন আগে অপুর নিকেতনের বাসায় তালাকনামা পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে অপু বিশ্বাসের সাথে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে শাকিব খান বর্তমানে শুটিংয়ের কাজে ভারতে রয়েছেন।
ভাইবারে যোগাযোগ করা হলে শাকিব প্রিয়.কমকে বলেন, “অনেক আগ থেকেই আইনজীবীর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে আমি ভারতে আসার আগে তালাকনামায় স্বাক্ষর করে আসি। দেশে ফিরে বাকি কথা হবে।”
শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস তাদের বিয়ের খবর গত নয় বছর ধরে গোপন রেখেছিলেন। এরপর এ বছরের ১০ এপ্রিল (সোমবার) বিকেল ৪টায় দেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে একপ্রকার হাটে হাড়ি ভেঙে দেন অপু।
এতদিন অপু বিশ্বাস গোপনে আগলে রেখেছিলেন শাকিব খানের ঔরসজাত সন্তানকে। কলকাতার একটি ক্লিনিকে ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জন্ম হয় শাকিব-অপুর ছেলে আব্রাহাম খান জয়ের। সে সময় অপু বিশ্বাসের সিজারও করা হয়। এ খবর প্রকাশের পর থেকেই শাকিবের সাথে অপুর মান-অভিমান চলছেই। একটা সময় গিয়ে এ নিয়ে শাকিবের সাথে অপুর দূরত্ব তৈরি হয়। এখন ছেলেকে নিয়ে রাজধানীর নিকেতনের বাসায় অপু তার পরিবারের সাথে শাকিবকে ছাড়াই আছেন।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর ছিল শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের ছেলে আব্রাম খান জয়ের প্রথম জন্মদিন। জন্মদিনের দাওয়াতপত্রে অপু বিশ্বাস ও জয়ের ছবি থাকলেও শাকিব খানের কোনো ছবি ছিল না। তখনও শাকিব-অপুর সম্পর্কের চরম টানাপোড়নের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এমনকি ছেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠানেও যাননি শাকিব! যদিও শাকিব তার ছেলের সাথে সেদিন দিনের বড় একটি অংশ কাটিয়েছেন। এরপর থেকেই তাদের সম্পর্কের টানাপোড়েন দিনকে দিন বাড়ছিল।
অপু বিশ্বাস ২০০৪ সালে আমজাদ হোসেনের ‘কাল সকালে’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। এরপর ২০০৬ সালে পরিচালক এফ আই মানিক পরিচালিত ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিতে নায়িকা হিসেবে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত টানা এই জুটি একাধারে ৭০টির মতো ছবিতে জুটি বাঁধেন। একসাথে কাজ করতে গিয়ে একসময় পরস্পর প্রেমের বাঁধনে জড়িয়ে যান। এরপর ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন শাকিব-অপু।
যে কারণে তালাক
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিজে দেশে না থাকলেও আইনজীবীর মাধ্যমে অপুকে তালাকনামা পাঠিয়েছেন তিনি। সোমবার ঐ নোটিশ হাতে পেয়েছেন অপু বিশ্বাস। শাকিবের আইনজীবী সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রিয়.কমকে বলেন, ‘তালাক নোটিশে দুটি কারণ দেখিয়েছেন শাকিব। প্রথম অভিযোগ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, অপু তাদের সন্তানকে বাসার কাজের লোকের কাছে রেখে, কথিত বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে ভারতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। দ্বিতীয় অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, যেহেতু অপু তার নির্দেশ মেনে চলেন না, ফলে তিনি এই বিবাহ বিচ্ছেদ চান’।
এদিকে গত ৩০ নভেম্বর শাকিবের পক্ষ থেকে তার আইনজীবী তালাকের নোটিশটি পাঠান। কিন্তু অপু বিশ্বাস নোটিশটি গ্রহণ করেননি বলে জানা গেছে। অপুর নিকেতনের বাসা ছাড়াও তালাকের এই নোটিশটি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কার্যালয় এবং অপুর বগুড়ার বাসার ঠিকানাতেও পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এ তালাক কার্যকর হবে নোটিশ পাঠানোর তারিখ থেকে তিন মাস পর।
এদিকে অপুর ঢাকার নিকেতনের বাসায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তারক্ষী মিলন মিয়া ৪ ডিসেম্বর বিকালে বলেন, ‘আমাদের উপর থেকে নির্দেশ রয়েছে কোন চিঠি কিংবা কোন কাগজ আসলে গ্রহণ না করার জন্য। আর এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’
জানা গেছে, বিয়ের দেনমোহর বাবদ সাত লাখ টাকা অপুকে পরিশোধ করবেন শাকিব খান। এছাড়া তিনি একমাত্র পুত্র সন্তান আব্রাম খান জয়ের ভরণ-পোষণ করবেন।
সূত্র : অপুকে তালাকনামা পাঠালেন শাকিব [পরিবর্তন, ৪ ডিসেম্বর ২০১৭]