হৃদিতা ধর ।।
কোন কোন ভিক্ষুকেরও আপন বা কাছের কেউ প্রথম শ্রেণীর চাকরি করে। আবার অনেক এমপি বা মন্ত্রীর কাছের বা দূরের আত্মীয় স্বজনেরাও ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন করে। আসলে তারা মানুষের কাছে হাত পাততে রাজি আছে, তবু কুলাঙ্গার আত্মীয়ের কাছে না। কিছু কিছু মানুষ আছে, কিছু কিছু না অনেক মানুষ আছে যারা ভালো স্ট্যাটাসে যাওয়ার পর নিচের দিকে আর তাকায় না। নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায়। তখন মানুষজনদের আর মানুষই ভাবে না। এসব টাকার কাঙ্গালদের চেয়ে ভিক্ষুক অনেক উঁচু পর্যায়ের। যারা নিজের বাবাকে সহকর্মীর সামনে ইংলিশে “সার্ভেন্ট” বলে পরিচয় দেয়। তারা কখনো, কোন জন্মেই মানুষ হতে পারে না। তারা মানুষ নামের কলঙ্ক। তারা শুয়োরের চেয়েও নিকৃষ্ট প্রাণী।
বাবার পরনে ময়লা লুঙ্গি আর ছেঁড়া গেঞ্জি পরা থাকলে আর নিজের বড় বড়, লম্বা লম্বা জুতা, টাই, কোট পড়ে থাকলে তবেই বাবাকে “বাবা” বলে পরিচয় দেয়া যাবে! এটা কোন গ্রন্থে কোন মনীষী দ্বারা গ্রন্থিত আছে?
এমন ছেলের কাছে হাত পাতার চেয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করা সহস্রগুণ ভালো। এমন সন্তান পেটে নেয়ার চেয়ে কোটি কোটি বছর বন্ধ্যাত্ব থাকা অনেক অনেক ভালো।
আজব আজব মানুষের ভিড়ে বসে আমি মানবতার নিমজ্জিত চেহারা দেখি। দেখি চোখের সামনে কলঙ্কের কালিতে কালো হয়ে যাওয়া ধবধবে সাদা চেহারাগুলো। হাস্যময় বটে!
জানেন? অনেকগুলো চরিত্রের পাশে বেড়ে উঠেছি! অনেক থানা, জেলা, বিভাগের মানুষের সাথে চলতে শিখেছি। অদ্ভুত লাগে, কোথায় জানেন? অদ্ভুত তখনই লাগে, যখন শুনি বড় ভাই বা বড় বোন বিদেশ থাকে, বড় চাকরি করে আর বাবা-মায়ের সাথে কথা বলে না বা সম্পর্ক নেই। আসলে আমরা কি এক অদ্ভুত জগতে আছি। তাই না?
কথাগুলো আমার নিকটাত্মীয়কে নিয়ে লেখা। সবাই একটু ভেবে দেখবেন। হাই সোসাইটিতে দেশে বাবা-মা মদ খেতে নিষেধ করলে বা ছেলেমেয়েকে জোর করে কোন কিছু করালে, সেই সোসাইটিতে বাবা-মার নামে জিডি করার নিয়ম আছে।
আর নিচু সমাজে বৃদ্ধ মা’কে গোয়ালে রাতযাপন করতে দেয় যাতে শিয়াল-কুকুর কামড়ে যেতে পারে। বাকিটা বাঙালীর ইতিহাস বলে দিবে। বর্তমান প্রতিনিয়ত বলছে। অনাগত ভবিষ্যতে আরো কোটিগুণ হারে বলবে।
আমি এই সোসাইটিকে ঘৃণা করি। তুমুল ঘৃণা করি। থুথু লেপে দেই এই সোসাইটির কপালে। ছিঃ ছিঃ ছিঃ।
লেখক : অনার্স (২য় বর্ষ), ইংরেজি বিভাগ, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ।