আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে এক প্রভাবশালী পরিবারের নির্যাতনে মারাত্মকভাবে আহত হওয়া মো. শিখন মিয়া (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ দিন পর সোমবার রাতে দিনমজুর শিখনের মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার মুমুরদিয়া ইউনিয়নের বাগহাটা গ্রামের নূর হোসেনের ছেলে।
সূত্র জানায়, গত ২২ ডিসেম্বর সকালে উপজেলার মুমুরদিয়া ইউনিয়নের চাতল বাগহাটা গ্রামের নেশাগ্রস্ত রোকন মিয়া দিনমজুর শিখন মিয়ার ঘরের সামনে আবোলতাবোল বকতে থাকেন। এ সময় রোকনকে চলে যেতে বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে শিখন নেশাগ্রস্ত রোকনকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেন।
এ ঘটনায় রোকন, তার বাবা, চাচা, ভাই ও চাচাতো ভাইরা মিলে শিখনকে হাত-পা বেঁধে লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা নির্যাতন করে। নির্যাতনে শিখনের নিচের পাটির একটি দাঁত ভেঙে যায়। এ ছাড়া তার জিহ্বা, মাথাসহ সারা শরীরে মারাত্মকভাবে জখম হয়।
এ সময় তার টিনশেড বসতঘরটি ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে ভাংচুর করা হয়। শত শত মানুষ এ তাণ্ডব দেখলেও প্রভাবশালীদের সামনে কেউ উদ্ধার করতে সাহস পায়নি।
খবর পেয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাথী বেগম স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসমাইল, শাস্তু ও আল আমিনকে নিয়ে শিখনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান।
সেখানে শিখনের অবস্থার অবনতি হলে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে তাকে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে তার পরিবার।
গত শনিবার তার অবস্থার চরম অবনতি দেখে গ্রামের মানুষ অর্থ সাহায্য দিয়ে তাকে আবার প্রথমে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সাবেক ইউপি সদস্য হাজী মো. তাহের উদ্দিন বলেন, অমানবিক নির্যাতনে দিনমজুর শিখন মিয়ার মৃত্যু হয়েছে। আমরা দোষীদের বিচার চাই।
কটিয়াদী থানার ওসি জাকির রব্বানী বলেন, এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি। খবর পেয়ে গত শনিবার একজন অফিসারকে পাঠানো হয়।
নির্যাতনে শিখনের মৃত্যু হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে ওসি বলেন, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সূত্র : প্রকাশ্যে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, দিনমজুরের মৃত্যু [যুগান্তর, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮]