কে এন দেয়া ।।
অটিজম এবং রক্তে উপস্থিত প্রোটিনের মাঝে সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ফলে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই শনাক্ত করা যাবে অটিজমের উপস্থিতি।
১৯ ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতিতে এই গবেষণার কথা জানান ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইকের গবেষক ড. নায়লা রাব্বানি। তাদের এই গবেষণা প্রকাশিত হয় মলিকুলার অটিজম জার্নালে।
ড. রাব্বানির নেতৃত্বে থাকা গবেষকরা রক্তে এবং মূত্রে প্রোটিনে ক্ষতির মাত্রা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। এর মাধ্যমে অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারগুলো শনাক্ত করা যাবে বলে তারা আশা করছিলেন।
‘প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত এবং চিকিৎসার সুযোগ করে দিতে পারে গবেষণার এই ফলাফল’, বলেন ড. রাব্বানি। তা সহজে অটিজম শনাক্ত করা এবং অটিজমের কারণ বের করার ক্ষেত্রেও উপকারী হতে পারে।
গবেষণায় তারা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নেন। অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ৩৮ জন শিশু (২৯ ছেলে শিশু এবং ৯ মেয়ে শিশু) এবং ৩১ জন সুস্থ শিশু (২৩ ছেলে শিশু এবং ৮ মেয়ে শিশু) এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। তাদের সবার বয়স ছিল ৫ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত।
গবেষকরা তাদের রক্ত এবং মূত্রের নমুনা সংগ্রহ করেন। দেখা যায়, এই দুই গ্রুপের শিশুর নমুনায় উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। যেসব শিশুর অটিস্টিক স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার ছিল তাদের নমুনায় বেশী পরিমাণ ডিট্রিওসিন (ডিটি) এবং অ্যাডভান্সড গ্লাইকেশন অ্যান্ড প্রডাক্টস (এজিই) আছে।
একটি অ্যালগরিদম ব্যবহার করে এই তথ্য ছেঁকে দেখা যায়, তাদের এই প্রক্রিয়া ৯০ শতাংশ ত্রুটিমুক্ত, যা অটিজম শনাক্ত করার বর্তমান প্রক্রিয়াগুলোর চাইতে বেশী নিখুঁত।
এই গবেষণা অনেক ছোট পরিসরে করা হয়েছে। তাই নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও বড় পরিসরে গবেষণা করা জরুরি। তবে সত্যিই যদি এই পদ্ধতি প্রমাণিত হয়, তা অনেক ক্ষেত্রেই উপকারী হবে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অটিজম শনাক্ত করা ছাড়াও, ডাক্তাররা বুঝতে পারবেন অটিজমের ওষুধ কারো ওপরে কাজ করছে কীনা।
অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারের ফলে শিশুদের মাঝে আচরণগত বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। যেমন কম্পালসিভ বিহেভিয়র, অ্যাংজাইটি, কথা বলতে জড়তা ইত্যাদি। পৃথিবীর জনসংখ্যার এক শতাংশ এতে আক্রান্ত। এর কারণে তাদের দৈনন্দিন জীবন যাপনই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। প্রাথমিক পর্যায়ে তা শনাক্ত করা অনেকের জন্যই আশার আলো হয়ে উঠতে পারে। সূত্র : IFLScience
সূত্র : রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে অটিজম! [প্রিয় ডটকম, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮]