আরশীর চোখের সানগ্লাস খুলে বার বার মুছছে| পাশ থেকে একজন বন্ধু বলছে, কী রে আরশি সমস্যা কি? বার বার চোখের সানগ্লাস খুলছিস কেন? তুই নিজেও জানিস, চোখে কাজল পড়লে তোর সমস্যা হয়, তবুও কেন কাজল পড়তে হবে?
এ কথার উত্তর দেয়া যায়, কিন্তু আরশী চুপচাপ বসে আছে| আরশী জানে, ওর একটু এলার্জির সমস্যা আছে কিন্তু কি করা!
আরশীর জন্য আজ বিশেষ দিন| আজ ওর রাজপুত্র আসবে! তাই অন্যদিনের চেয়ে আজকের সাজে অবশ্যই ভিন্নতা আছে| আজ নববর্ষ উপলক্ষে লাল পাঁড়ের শাড়ি পড়েছে। খোঁপায় বেলী ফুলের মালা| কাজল পড়েছে চোখে| জীবনের পচিঁশটা বসন্ত, পচিঁশটা বৈশাখ একাকী কেটেছে! কখনো কারো চোখে চোখ রাখা হয়নি! মনে মনে কত ভেবেছে আসবে কি সেই দিন? তারপর হুটহাট করে এক অপরিচিত নাম্বার থেকে বার্তা এলো বন্ধু হবে কি আমার? তারপর কথোপকথন চলছে! রাজপুত্র বললো, আমি কিন্তু পহেলা বৈশাখে তোমাকে নিয়ে ঘুরতে বেরোবো, যাবে তো! সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিলো, কোথায় যেন রেশ কেটে গেলো! সকালে ফোন করে বললো, _আরশী তোমাকে একটা কথা বলা হয়নি, আমার বিয়েটা পারিবারিকভাবে ঠিক হয়ে আছে আমার কাজিনের সাথে!
আরশী কি করবে, খোঁজ করবে ওর পরিবারে, ঘটনা সত্যি কিনা! মনে মনে ভাবে কি দরকার, ভালোবাসার মানুষকে যাচাই করার কি দরকার!
স্বপ্ন ভাঙার অপরাধে কি শাস্তি দেয়া যায় তা জানে না, তবু এটুকু বুঝেছে রাজপুত্রের জন্য তার জীবনের অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে!
রাজপুত্র আসবে না জেনে, চোখ দুটো বার বার ভিজে যাচ্ছে! বন্ধুদের কাছ থেকে আড়াল করার জন্য চোখ দুটো ঢেকে রেখেছে সানগ্লাস দিয়ে! কতক্ষণ নিজেকে আড়াল রাখতে পারবে আরশী জানে না?
লেখক : শাইলা পারভীন সুমা