কারাবন্দীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সহায়তা করুন : রাষ্ট্রপতি

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ সংশোধনের মাধ্যমে কারাবন্দীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সহায়তা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কারা কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মঙ্গলবার (২০ মার্চ) দুপুরে কারা সপ্তাহ-২০১৮ উপলক্ষে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘পৃথিবীতে কেউ অপরাধী হিসেবে জন্মায় না। বিভিন্ন অনাকাঙ্খিত ও প্রতিকূল পরিবেশ তাদের অপরাধী বানায়। সেই কারণে, কারা কর্তৃপক্ষকে তাদের প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়াতে হবে যাতে তাদের মধ্যে মূল্যবোধ জাগ্রত হয় ও পরবর্তীতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে।

কারা কর্তৃপক্ষ তাদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণসহ সংশোধিত হওয়ার ও উৎসাহমূলক কার্যক্রম নিতে পারে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ সুষ্পষ্টভাবে বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ কারাবন্দীদের বন্দী জীবন থেকে ফেরার পর সমাজের মূল স্রোতধারায় ফিরে নতুন জীবন শুরু করায় এবং রাষ্ট্রীয় উন্নয়নের কাজে অবদান রাখায় সহায়ক হবে। বাসস

এবারের কারা সপ্তাহ ২০১৮-এর মূল প্রতিপাদ্য ‘সংশোধন ও প্রশিক্ষণ, কারাবন্দীদের করবে পুনর্বাসন।’

আব্দুল হামিদ এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রয়াত জাতীয় চার নেতার কারা জীবনের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘কারা কর্তৃপক্ষকে এ কথা মনে রাখতে হবে যে কেবল অপরাধীই নয় অনেক রাজনীতিক নেতৃবৃন্দও বিভিন্ন সময় কারা জীবন যাপন করেছেন।’

কারাবাসীদের জন্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ও সুবিধাদির উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, তাদের দক্ষ মানবশক্তিতে রূপান্তরিত করার লক্ষে এ ধরনের প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হবে।

কারাগারে বন্দীদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং কিছু নতুন সুযোগ-সুবিধা চালু প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, বন্দীরা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করায় তারা দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত হয়ে থাকেন।

বন্দীদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার জন্য মোবাইল ফোন বুথ চালুর প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এ জাতীয় উদ্যোগ বন্দীদের মন ভালো রাখতে সহায়তা করবে।

কারাগারে হস্তশিল্প ও বেকারি স্থাপনের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এটি একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, কারাগার শিল্পে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি থেকে লাভের শতকরা ৫০ ভাগ পান বন্দিরা।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জেল থেকে মুক্তির পর তারা যাতে নতুন জীবন শুরু করতে পারেন, সে জন্য তাদের এই প্রশিক্ষণ ও মুনাফা প্রদান করা হয়ে থাকে।’

কারাগারের ভেতর ‘অবৈধ মাদক ব্যবসার’ বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপতি কারাগার কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘কারাবন্দীদের একটি বড় অংশ মাদক সংক্রান্ত মামলায় সাজা পেয়ে কারাগারে আটক রয়েছে। এই অনৈতিক কাজে কারাগার প্রশাসন থেকে যেন কেউ জড়িত হতে না পারে, সে জন্য কঠোর নজরদারি করা প্রয়োজন।’

দেশ ও জাতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রপতি কারাগার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে কারাগারের ভেতর কোন জঙ্গি, শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী কোন রকম সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে না পারে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, নিরাপত্তা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ও আইজিপি (প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

Similar Posts

error: Content is protected !!