আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
মেসি ছেলেখেলা খেলবেন ইতালির রক্ষণভাগ নিয়ে। গোলবন্যায় ভাসবে ম্যানচেস্টার স্টেডিয়াম। হয়তো এমন স্বপ্নে বুঁদ হয়েছিল আর্জেন্টিনা-মেসিভক্তরা। তাদের স্বপ্নে খানিকটা ব্যাঘাত ঘটেছে বৈকি। চোটের কারণে মেসি খেলেননি। বিশ্বকাপের আগে তাঁকে নিয়ে কেন ঝুঁকি নেবে আর্জেন্টিনা! তবে মেসিকে ছাড়াই দুর্দান্ত খেলেছে সাম্পাওলির শিষ্যরা। প্রীতি ম্যাচে ইতালিকে ২-০ গোলে হারিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।
অন্যদিকে, দলের প্রাণভোমরা নেইমার নেই। কিন্তু তা যেন বয়েই গেছে কুতিনহো, পাউলিনহোদের। এ ব্রাজিল নেইমারের ওপর নির্ভরশীল নয়, বরং তা যেন প্রমাণ করার দায় নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন তাঁরা। সে তেজে ঝলসে গেল রাশিয়া। স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে নেইমারবিহীন ব্রাজিল জয় পেয়েছে হেসেখেলে ৩-০ গোলে। একটি করে গোল করেছেন মিরান্ডা, কুতিনহো ও পাউলিনহো।
প্রথমার্ধে সামান্য হলেও মেসির অভাব বোধ করেছেন আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়েরা। সে জন্যই বলদখলের লড়াইয়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে থেকেও গোল ছাড়াই মাঠ ছাড়তে হয় মারিয়া-হিগুয়েনদের। সেটা অবশ্য ওই বুফনের কারণে। ইতালির ৪০ বছর বয়সী গোলরক্ষক ছিলেন অসাধারণ, অনন্য। অন্যভাবে বললে বুফনই রুখে দাঁড়ান আর্জেন্টিনার সামনে। এক বুফনেই আটকে যায় আর্জেন্টিনার প্রথমার্ধের খেলা। শেষ পর্যন্ত ৭৫ মিনিটে বেনেগা ও ৮৫ মিনিটে লানজিনির গোলে ২-০তে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের কালো জার্সিতে খেলা আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়েরা। খেলা দেখতে আসা মেসির ঠোঁটের কোণায় তখন হাসির ঝিলিক। এমন দল পেলে তাঁর বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নটাও হয়তো পূরণ হবে। কে জানে!
ব্রাজিলের সঙ্গে যে রাশিয়া পেরে উঠবে না, তা অনুমেয়ই ছিল। কিন্তু নেইমারবিহীন ব্রাজিল কেমন করে, তা–ই ছিল দেখার অপেক্ষা। প্রথমার্ধে কিন্তু নেইমারের অভাবটা ধরা পড়ছিল প্রকটভাবে। গোল মুখ না খুলতে পারলে, কে নেই তাই তো চোখে পড়ে বেশি। প্রথমার্ধে রুশ প্রতিরক্ষা কৌশল ভেঙে একটিবারের জন্যও ভীতি সৃষ্টি করতে পারেননি বিশ্ব মাতানো তারকারা। বরং কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বারবারই ভয়ংকর হয়ে ওঠার চেষ্টা করছিল স্বাগতিকেরা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই চেনা ছন্দে ব্রাজিল। পাসের পর পাসের মালা গাঁথা। বক্সে ওয়ান-টু টাচে দ্রুত খেলে জায়গা বদল করা। প্রয়োজনে দুই উইংয়ে কুতিনহো ও উইলিয়ানতো বল হোল্ড করে রাখছিলেন। ৪৭ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি নষ্ট করেন গত বছরে ব্রাজিলের হয়ে সর্বোচ্চ গোল করা এ মিডফিল্ডার পাউলিনহো। ৫৩ মিনিটে প্রথম গোল করেন ডিফেন্ডার মিরান্ডা। দ্বিতীয় গোল আসে কুতিনহোর করা স্পট কিক থেকে। ৬৬ মিনিটে শেষ গোলটি করে পাউলিনহো; যেন খেলার সহজ সুযোগ হাতছাড়া করার পাপমোচন। এ জয়ের ফলে ২০১৮ সালটাও দুর্দান্ত শুরু করল ব্রাজিল। কোথায়? সেই রাশিয়ায়; যেখানে কয়েক মাস পরেই বসবে বিশ্বকাপের আসর। ব্রাজিলের জন্য বিশ্বকাপ কাউন্টডাউন বুঝি জয় দিয়ে শুরু হয়ে গেল!