সনদ ফেরত দিতে হাটহাজারী কলেজ কর্তৃপক্ষ নিলো ২৭ হাজার!

মাহমুদ আল আজাদ, হাটহাজারী প্রতিনিধি ।।

চট্টগ্রামের হাটহাজারী কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এসএসসি ও এইচএসসির সনদ তোলার জন্য এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৪১ হাজার টাকা দাবির পর দফারফা করে ২৭ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী সানজিদা হাসানের বাবা মো. ইব্রাহিম গত ৪ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ৫ এপ্রিল জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগের বিবরণে জানা গেছে, ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের উদালিয়া গ্রামের সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. ইব্রাহিমের মেয়ে সানজিদা হাসান হাটহাজারী কলেজে ম্যানেজমেন্ট নিয়ে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডে চাকুরি হয় সানজিদার। এ চাকরির জন্য তার প্রয়োজন হয় এসএসসি ও এইচএসসি পাসের সনদ এবং নম্বরপত্র; যা কলেজে সংরক্ষিত রয়েছে।

সনদগুলো পাওয়ার জন্য গত ২৮ মার্চ সকাল ১০টায় কলেজের অধ্যক্ষের কাছে যান সানজিদা ও তার বাবা-মা। এ সময় সনদ ফেরত দেয়ার জন্য কলেজ অধ্যক্ষ তাদের কাছে প্রথমে ৪১ হাজার টাকা দাবি করেন। তারা অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি তাদেরকে কক্ষ থেকে বের করে দেন। এবং কলেজ কর্মচারী শাহ আলমের সাথে দেখা করতে বলেন।

পরে তাদেরকে শাহ আলম ডেকে ১০ হাজার বাদ দিয়ে ৩১ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলেন। এরপর মেয়ের ভবিষ্যৎ জীবনের কথা চিন্তা করে বাড়িতে এসে সুদের বিনিময়ে ৩০ হাজার টাকা ধার করেন সানজিদার বাবা। তারপর গত ১ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে কলেজে গিয়ে শাহ আলমের সাথে দেখা করে কাকুতি-মিনতি করে প্রথমে ২৫ হাজার টাকা দিলে তিনি তা ফেলে দেন। ওই টাকা তুলে নিয়ে আরো দুই হাজারসহ মোট ২৭ হাজার টাকা দেন মো. ইব্রাহিম। তখন সেই সনদগুলো ফেরত দেয়া হয়।

সানজিদার বাবা মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘সনদ তোলার জন্য মেয়েকে নিয়ে অধ্যক্ষের সাথে দেখা করলে তিনি ৪১ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি দরিদ্র মানুষ। এত টাকা এখন নেই জানানোর পর মেয়ের সামনে অধ্যক্ষ আমাকে অপমান করে অফিস থেকে বের করে দেন। এ ঘটনায় আমি হতবাক হয়েছি।’

অভিযোগের ব্যাপারে সত্যতা যাচাই করতে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মীর মোঃ কফিল উদ্দীনের মোবাইল ফোনে রিং দিলে তিনি ফোন রিসিভ করে ব্যস্ততা দেখিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহেদা ইসলাম জানান, ‘ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ করলে তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।’

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘সনদ তোলার জন্য মোটা অংকের টাকা দাবির সংযোগ নেই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মীর মোঃ কফিল উদ্দীন

Similar Posts

error: Content is protected !!