নববর্ষ উৎসব দেশে দেশে

জাহিদুল হক ।।
বাংলাদেশের মতো বিশ্বের আরো কয়েকটি দেশে এপ্রিলের মাঝামাঝি নববর্ষ উদযাপন করা হয়। এছাড়া চীন ও ইরানের নওরোজ উৎসবও বেশ ঘটা করে পালিত হয়।

চীনা নববর্ষ
বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত উৎসব। ঈদের মতোই এই উৎসব উপলক্ষ্যে শহরের মানুষ গ্রামে পরিবারের কাছে ফিরে যেতে চায়। কারণ ঐতিহ্য অনুযায়ী, নতুন বছর শুরুর আগের রাতে পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে মিলে রাতের খাবার খান। এই সময় ঘরবাড়ি পরিষ্কার করা হয়। লাল কাগজ দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে দরজা, জানালা সাজানো হয়। আর আতশবাজি পুড়িয়ে ভূতপ্রেত তাড়ানোর ব্যবস্থা হয়। একেক বছরে একেক তারিখে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) এটি পালিত হয়।

নওরোজ
ইরানের নববর্ষ উৎসব। বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো পরবগুলোর মধ্যে এটি একটি। শুরুটা ইরানে হলেও এখন বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩০ কোটি মানুষ এই উৎসব উদযাপন করেন। এটি বাসন্তী উৎসবও বটে। ইউনেস্কো নওরোজকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের তালিকায় তুলে নেয়। ২০ বা ২১ মার্চ, রাত আর দিন যখন সমান হয়, তখন নওরোজ উদযাপিত হয়। নওরোজের মানে নতুন ঘাস, প্রকৃতিতে নতুন পল্লবের ছোঁয়া। ছবিতে দুই নারীকে সেই প্রতীক তুলে ধরতে দেখা যাচ্ছে।

সংক্রান
প্রতিবছর এপ্রিলের ১৩ তারিখ থাইল্যান্ডে নববর্ষ উৎসব পালিত হয়। তবে ১৪ ও ১৫ তারিখেও ছুটি থাকে। পানি ছিটিয়ে একে-অপরকে ভিজিয়ে দেয়া এই উৎসবের একটি অংশ। অনেক থাই নাগরিক এই ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে বয়স্কদের সঙ্গে দেখা করেন।

রাঙ্গলি বিহু
আসামের নববর্ষ উৎসব এটি। ১৪ কিংবা ১৫ এপ্রিল এটি উদ্যাপিত হয়। রাঙ্গলি বিহুর একটি অংশ ‘গরু বিহু’। গরু যেহেতু কৃষকের জীবিকা আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তাই এই সময় গরুকে গোসল করিয়ে (ছবি) তার পূজা করা হয়। এছাড়া সেসময় রঙের খেলা আর নাচ-গানেরও আয়োজন থাকে।

বৈশাখী
শিখ ধর্মের অনুসারীরা প্রতিবছর ১৪ এপ্রিল নববর্ষ উদ্যাপন করে। এটি একটি ফসল তোলারও উৎসব। এদিন সকালে ভক্তরা ফুল নিয়ে গুরুদুয়ারায় হাজির হন। সেখানে গান-বাজনার ব্যবস্থা থাকে। এছাড়া ভক্তিমূলক অনুষ্ঠান ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

আলুথ অভুরুদ্দ
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের মতো শ্রীলংকাতেও ১৩ কিংবা ১৪ এপ্রিল নববর্ষ উদযাপিত হয়। গরুর গাড়ির দৌড় (ছবি) এই উৎসবের একটি অংশ।

থিনজান
মিয়ানমারের নববর্ষ উত্সব। এপ্রিলের মাঝামাঝি এটি পালিত হয়। পানি নিয়ে খেলা এই উৎসবের একটি বড় অংশ। চার-পাঁচদিন ধরে চলা এই উৎসবে তরুণ-তরুণীরা নাচে-গানে মেতে উঠেন।

চউল চনাম থিমে
কম্বোডিয়ার নববর্ষ। সাধারণত ১৩ কিংবা ১৪ এপ্রিল এই উৎসব পালিত হয়। তবে ছুটি থাকে তিনদিন। সংক্রান আর থিনজানের মতো পানি খেলা এই উৎসবেরও মূল আকর্ষণ। এই সময় ঘরে ঘরে বিশেষ খাবারও রান্না করা হয়।

সূত্র : বিভিন্ন দেশের নববর্ষ উৎসব  [ডয়চে ভেলে, ১৪ এপ্রিল ২০১৮]

Similar Posts

error: Content is protected !!