আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
পুরুষদের জন্য দাড়ি-গোঁফ যেমন গর্বের তেমন নারীদের জন্য এটা ততটাই অস্বস্তিকর। অনেক নারীরই দেখা যায় গালে বা মুখের ওপরের অংশে দাড়ির মত চুল গজাচ্ছে। এর অনেক কারণ থাকতে পারে। আসুন জেনে নেই কারণসমূহ।
কারণ : ৪.৭ শতাংশ ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ কারণ ছাড়াই হার্সুটিজম হতে পারে। হার্সুটিজম সাধারণত নারীদেহে ডিম্বাশয় বা এড্রেনাল গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত এন্ড্রোজেন হরমোন (যেসব হরমোন পুরুষালি বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী) নিঃসরণের কারণে হয়ে থাকে। ৭০-৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে হার্সুটিজম আক্রান্ত নারীর রক্তে এন্ড্রোজেন হরমোন বেশি থাকে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডিম্বাশয়ই এ অতিরিক্ত এন্ড্রোজেনের উৎস।
ডিম্বাশয়ের কিছু রোগ, যেমন- পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম, হাইপার ইন্সুলিনিজমিক হাইপার এন্ড্রোজেনিজম উইথ এন অভ্যুলশন, ওভারি বা এড্রেনাল গ্রন্থির কিছু টিউমার বা ক্যান্সারের কারণেও এন্ড্রোজেন হরমোন নিঃসরণ বেড়ে হার্সুটিজম হয়। এড্রেনাল গ্রন্থির সমস্যার মধ্যে রয়েছে কঞ্জেনিটাল এড্রেনাল হাইপারপ্লাসিয়া, এড্রেনাল এডেনোমা, কার্সিনোমা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পিটুইটারি গ্রন্থির রোগ, যেমন- কুশিং ডিজিজ, অ্যাক্রোমেগালি ইত্যাদি। কিছু ওষুধ গ্রহণের ফলেও এমন সমস্যা হতে পারে। যেমন- মিনক্সিডিল, কর্টিকোস্টেরয়েড, ফিনাইটইন, ডায়াজক্সাইড ইত্যাদি।
শরীরে অতিরিক্ত চুলের অন্য কারণটি হলো- হাইপারট্রাইকোসিস, যাতে এন্ড্রোজেনের প্রভাববিহীন দাড়ি-গোঁফ ছাড়াও সারা শরীরেই পাতলা চুল বা লোম গজায়। এটি কিছু রোগের কারণে হয়। যেমন- জন্মগত কিছু রোগ, পরফাইরিয়া, বুলোসা, হাইপোথাইরয়েডিজম, এপিডার্মোলাইসিস, ডার্মাটোমাইয়োসাইটিস, পুষ্টিহীনতা ইত্যাদি।
হার্সুটিজম রোগের সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য এ রোগের ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। যেসব ক্ষেত্রে হার্সুটিজম স্থির থাকে অর্থাৎ নতুন করে দাড়ি-গোঁফ গজায় না, সে ক্ষেত্রে কোনো প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার দরকার নেই। যাদের হার্সুটিজমের সঙ্গে পুরুষালি লক্ষণ থাকে এবং তা দ্রুত বাড়তে থাকে, সে ক্ষেত্রে হার্সুটিজমের কারণে টিউমার বা ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ডা. দিদারুল আহসান : চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ।
সূত্র : নারীর শরীরে দাড়ি-গোঁফ, কিন্তু কেন? [সময় নিউজ, ২ মে ২০১৮]