খাইরুল মোমেন স্বপন, বিশেষ প্রতিনিধি ।।
টানা বর্ষণ আর জলাবদ্ধতায় ধান নিয়ে বিপাকে কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা নিকলীতে দেখা দিয়েছে গবাদি পশুর মড়ক। মড়কের কারণ তর্কা বলেই চিহ্নিত করেছেন চিকিৎসকরা।
জানা যায়, হাওর উপজেলা নিকলীতে গত চৈত্র মাস থেকে একের পর এক গবাদি পশু মারা যাচ্ছে। মৃত পশুগুলোর বেশির ভাগই গরু। দুগ্ধ ও মাংস উৎপাদনকারী একেকটি পশু মূল্যের হিসাবে দেড়-দুই লাখ টাকারও বেশি। দামপাড়া ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ২ মাসেরও কম সময়ে শুধু এ গ্রামেরই ২৫টি গরু মারা গেছে।
খামারি জুয়েল মিয়া (২৭) জানান, সময় মতো টিকা পাই না। পেলেও পরিবহন ও সংরক্ষণের অভাবে বেশিরভাগ মেয়াদোত্তীর্ণ। ঝড় বৃষ্টিতে ধান নিয়ে বিপাকে পরা আমাদের গরুগুলোর মৃত্যু গোঁদের ওপর বিষ ফোঁড়ার মতোই বেদনাদায়ক।
একই গ্রামের মৃত বাইশু মিয়া (৩০) জানান, সম্পূর্ণ সুস্থ্য গরু হঠাৎ পড়ে যাচ্ছে। পেট ফুলে উঠছে। নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। তার ২টি গরু মারা গেছে।
বড়কান্দা গ্রামের মাংস উৎপাদন খামারি ও বড়কান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান সাদেক বলেন, আমার গ্রামে ৫টি গরুর মৃত্যুর কথা জানি। আমি আগেই তর্কার টিকা দিয়ে রেখেছিলাম। তাই রক্ষা।
নিকলী উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মৃত পশুর লক্ষণ শুনে তর্কা রোগে গরুগুলোর মৃত্যুর কারণ বলে জানান। তিনি আরো জানান, গবাদি পশুর জন্যে তর্কা একটি ভয়াবহ রোগ। ৬০-৭০ বছর পর্যন্ত এ রোগের জীবানু বেঁচে থাকে। মৃত পশুদের ৭-৮ ফুট গর্তে সমাধিস্থ করতে তিনি কৃষকদের পরামর্শ দেন। সরেজমিনে গিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে তিনি তাৎক্ষণিক তার কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন।