ঝড় ও শিলাবৃষ্টির তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড কয়েক গ্রাম, স্কুল, বাড়িঘর

খালিয়াজুরী (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি ।।

গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এমনতেই গ্রামের কৃষকের অবস্থা ত্রাহি ত্রাহি। কৃষক ধান কেটে গোলায় উঠাতে ব্যস্ত কিন্তু বৃষ্টির কারণে ধানে চারা গজাচ্ছে। তার ওপর আবার শুক্রবার (১১ মে ২০১৮) খালিয়াজুরী উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে বয়ে যাওয়া সকালের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বাজার, গ্রাম, স্কুল, গবাদি পশু ও নদীতে নোঙর করে থাকা নৌকাও।

শিলাবৃষ্টিতে অনেক ঘরের টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। এলাকার একজন বয়োজ্যেষ্ঠর সাথে কথা হলে তিনি জানান, এভাবে এত পরিমাণে শিলাবৃষ্টি অতীতে হয়েছে বলে মনে হয় না। ঘরের চালগুলো ঝাঝড়ির মতো হয়ে গেছে। চাল ছিদ্র হয়ে যাওয়ায় গোলায় রাখা ধানগুলোও ভিজে গেছে অনেক কৃষকের।

মুসলিম বাজারের পাশের বাড়ির ও কুতুবপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুসলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা আলী আজমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, উত্তর দিক থেকে বয়ে যাওয়া ঝড়ে গ্রামের অনেক গাছপালা ভেঙ্গে গেছে ও কাঁচা ঘরবাড়িরও ক্ষতি হয়েছে।

মুসলিমপুর বাজারের শেষ প্রান্তে অবস্থিত অংকুর কিন্ডারগার্টেনের স্কুল ঘরটি সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়েছে। স্কুল ঘরে শুধুমাত্র কয়েকটি বেঞ্চ ছাড়া কিছু অবশিষ্ট দেখা যায়নি। এই বিদ্যালয়ের পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক জানান, নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত স্কুলটির কিছু অবশিষ্ট রইল না। এই বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের সামনের দিনগুলোতে কিভাবে পাঠদান করব এ নিয়ে বেশ শঙ্কায় আছি। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

ঝড়ের পরে কথা হয় ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার (কৃষ্ণনগর, নয়াহাটি, মুসলিমপুর, পোতাহাটি, ভুইয়াহাটি) চাঁন মিয়ার সাথে। তিনি জানান, এই ওয়ার্ডে কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০-১৫ লাখ টাকার মতো। তবে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।

৭নং ওয়ার্ডের (বেড়ি দৌলতপুর, জাহেরপুর, যাদবপুর) মেম্বার জাকির হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এই ওয়ার্ডে কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও গ্রামের পাশে নোঙর করে থাকা ব্যবসায়ীদের ধানের নৌকাগুলোও ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। কৃষকের ১০টি গরু ঘরের চাপায় মারা যায়। এখানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হতে পারে ২০-২৫ লাখ টাকা। শিলাবৃষ্টির তাণ্ডবে গ্রামের বিভিন্ন ঘরের চাল ছিদ্র হয়ে গেছে। এই অবস্থায় এই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন।

Similar Posts

error: Content is protected !!