কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা ।।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে মায়ের দায়ের করা মামলায় ছেলে কামরুল হাসানের (২৬) বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে কিশোরগঞ্জ জেলা জজ আদালত। ১৩ মে ২০১৮ দায়ের করা মামলায় এই ঘোষণা দেন আদালত।
জানা যায়, কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের পাঁচগাতিয়া গ্রামের বাসিন্দা সোহরাব হোসেন ও জেসমিন আক্তার দম্পতি। সোহরাব উদ্দিন একজন কৃষক আর জেসমিন আক্তার স্থানীয় পাঁচগাতিয়া ইঞ্জিনিয়ার এম এ মান্নান মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় আয়া পদে চাকুরি করছেন।
এক প্রতিবন্ধী ছেলেসহ ২ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে মোঃ কামরুল হাসান। গত ২ বছর আগে কামরুল বিদেশ যাওয়ার উদ্যোগ নেয়। মা-বাবার উপার্জনের সঞ্চিত অর্থ, ধার দেনা ও সুদে টাকা এনে প্রায় ৮ লাখ টাকা খরচ করে কুয়েতে যায়। প্রবাসে থাকা অবস্থায় কামরুল ঋণের ২ লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন।
পরিবারে টাকা না দিয়ে এরপর থেকে শ্বশুরবাড়িতে টাকা পাঠানো শুরু করে কামরুল। এদিকে দেনাদারের চাপের কারণে স্বামী সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন জেসমিন আক্তার। গত ২ মাস আগে কামরুল বাড়িতে না এসে শ্বশুরবাড়িতে উঠেন এবং স্ত্রীকে নিয়ে সদর উপজেলায় বাসা ভাড়া করে বসবাস শুরু করেন।
এক পর্যায়ে উপজেলা সদরে জমি কিনে নিজস্ব বাসা করার জন্য মা জেসমিন আক্তারকে চাপ দিতে থাকেন। এমনকি বাড়ি বিক্রি করে টাকা দিতে বলে। টাকা না দিতে অস্বীকৃতি জানালে মা জেসমিন আক্তারকে লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করে। এমনকি মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এলাকাবাসীর এগিয়ে এলে কামরুল পালিয়ে যায়।
ছেলের অত্যাচার থেকে বাঁচতে মা জেসমিন আক্তার গত ১৩ মে কিশোরগঞ্জ জেলায় জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
জেসমিন আক্তার বলেন, অনেক কষ্ট করে ছেলেকে বড় করেছি। সুখের আশায় ধারদেনা করে ৮ লাখ টাকা খরচ করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছিলাম। এখন ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ঘুরছি। সে আবার কটিয়াদীতে বাসা করার জন্য জমি বিক্রি করে টাকা দিতে বলে। এতে আমরা রাজী না হওয়ায় সে আমাদেরকে মেরে ফেলতে চায়। নিরুপায় হয়ে জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে আদালতের আশ্রয় নিয়েছি।