আবদুল্লাহ আল মহসিন।।
নিকলীর ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ; আঞ্চলিক ভাষায় নাও দৌড়ানি; দৌড়ের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। যে কোন সময় নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার দিন-তারিখ ঘোষণা হতে পারে। তাই বাইচালরা পাড়ায় বসে পরামর্শ করছেন। বিভিন্ন গ্রামের নৌকা মেরামত ও সংস্কার করা হচ্ছে। কোনো কোনো নৌকা রং করা ও মেরামত শেষে নদীতে দৌড় মহড়া দেয়া শুরু করেছে।
জনশ্রূতি আছে ভাদ্র মাসের ১ তারিখে সোয়াইজনী নদীতে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হতো নৌকা বাইচ। তবে কখন থেকে শুরু হয়েছে তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কিশোরগন্জের ইতিহাসবিদদের মতে, ষোড়শ শতকে নৌকা বাইচের সূচনা করেছেন ভাটির রাজা বীর ঈশা খাঁ। তিনি ভাটিতে রাজ্য বিস্তারে সর্বপ্রথম নৌ বাহিনী গঠন করেন।
কথিত আছে অষ্টগ্রামে ঈশা খাঁর গোপন নৌ ঘাটি ছিল। উক্ত নৌ ঘাটির মহড়া অনুষ্ঠিত নিকলীর সোয়াইজনী নদীতে। সেই থেকে শুরু নৌকা বাইচ। তখনকার সেইসব নৌকা চালিত হতো দাড়টেনে। আর একটি নৌকায় ষাইটটি দাড় যুক্ত ছিল। প্রচলিত আছে যে, প্রথম ষাট দাড় যুক্ত নৌকাটি রাতে সোয়াইজনী নদীর পশ্চিম দক্ষিণ ঘাটে রাতে অবস্থান করেছিল। পরবর্তীতে সেই জায়গাটি ষাইটধার নামে পরিচিতি পায়। কালের বিবর্তনে নৌকা বাইচেও পরিবর্তন এসেছে। এখন আর দাড় টানা বাইচ হয় না।
লোকসমাগম বেশি হওয়ায় গত কয়েক বছর যাবত নিকলীর বেড়িবাধে অনুষ্ঠিত হয়। দেশ-বিদেশের কয়েক লাখ মানুষের উপস্থিত থাকে বলে একে বলা হয় উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। ২০১৪ সালে সেপ্টেম্বরের ২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়েছিল নৌকা বাইচ। তবে এ বছরও সেপ্টেম্বরের শেষের দিকেই অনুষ্ঠিত হতে পারে।