নিজস্ব প্রতিনিধি ।।
গতকাল ২৫ মে সৃজন সাহিত্য সংগঠন-এর চতুর্থ “সৃজন সাহিত্য আড্ডা” ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা কাউতলীস্থ সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কবি ও লোকসাহিত্য গবেষক অধ্যাপক মহিবুর রহিম। মনিরুজ্জামান সি.পির সঞ্চালনায় কবিতা আবৃত্তি করেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল মোর্সেদ মোয়াজ, কবি সুহাইল সাদী, মোঃ হাসান, কবি জামাল হোসেন ও লেখক শাহজাদা জালালসহ আরো অনেকে।
নজরুল জন্মবার্ষিকীর উপর প্রবন্ধ পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ মোনাব্বির আহমেদ।
আলোচনা করেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক রহমান মাজিদ। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে কাজী নজরুল ইসলামের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা বাঙালি জাতি কিন্তু বাঙালির জাতীয় কবিকে যথাযথ মর্যাদা দিতে পারছি না। তিনি যেমন জীবিত থাকাকালীন হয়েছেন অবহেলার শিকার এখনো তাই হচ্ছেন। এটা আমাদের জাতীয় ব্যর্থতা। এই বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে। তবেই কবিকে মূল্যায়ন করা সম্ভব হবে।
কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্যকর্ম নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন বিশিষ্ট কবি মহিবুর রহিম। তিনি বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম শুধু বাংলাদেশের জাতীয় কবি নন, তিনি গোটা বাঙালি জাতির জাতীয় কবি। রবীন্দ্রনাথের যুগেই তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র যুগ স্রষ্টা কবি। তিনি শুধু সাহিত্যের নতুন যুগই সৃষ্টি করেননি, পরাধীন জাতিকে তিনি স্বাধীনতার মন্ত্রে দীক্ষিত করতে চেয়েছিলেন। সেটা তিনি সফল হয়েছিলেন। বিদ্রোহীর মতো অসংখ্য কালজয়ী সৃষ্টি সে যুগে জাতিকে উজ্জীবিত করেছিলো। তিনি বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠতম সাম্যবাদী কবি। তিনি সাম্যবাদী নামে কাব্যগ্রন্থও রচনা করেছেন, যা কালজয়ী সাহিত্যের মর্যাদা পেয়েছে। কবিতা, সংগীত, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাসসহ সাহিত্যের সব শাখায় সফলতা দেখিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নজরুলকে অকুণ্ঠ স্বীকৃতি দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নজরুলকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন, তাঁকে বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদা দেন। ১৯৭২ সালে তিনিই প্রথম রাষ্ট্রীয়ভাবে নজরুল জয়ন্তী পালনের সূচনা করেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এ কথা ঠিক এখনো নজরুলের প্রতি অবহেলা দেখানো হচ্ছে যা কিছুতেই কাম্য নয়। তিনি সবাই সবাইকে নজরুল আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয় সন্ধ্যায় দোয়া ও ইফতার আয়োজনের মধ্য দিয়ে। ইফতারে সংগঠনের সদস্যবৃন্দসহ অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- লেখক শাদমান শাহিদ, মো. আবদুল বাছির। আগামী শুক্রবার সৃজন সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হবে। সবাইকে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ মোনাব্বির আহমেদ তনন।