‘বাবা যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন’

প্রতিনিধি ।।
দারিদ্র্য আর অভাবের তাড়নায় লেখাপড়া ছেড়ে উপার্জনে নেমেছে শিশু আকাশ (১০)। বাবার অসুস্থতায় সংসারের হাল ধরতে বেছে নিয়েছেন রিকশার প্যাডেল। আকাশ নিকলী সদর ইউনিয়নের পূর্বগ্রাম পূর্বহাটির হতদরিদ্র জজমিয়ার ছেলে। দুই ভাই আর চার বোনের মধ্যে আকাশ পঞ্চম। বৃদ্ধ বাবা জজমিয়া হৃদরোগে আক্রান্ত। তিনিও পেশায় একজন রিকশাচালক।
হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় আগের মতো রিকশা চালাতে পারছেন না বাবা। আকাশের বড়বোন রুমা বেগমকে কারপাশা ইউনিয়নের শহরমূল গ্রামে ও আরেক বোন হাওয়া বেগমকে পার্শ্ববর্তী কটিয়াদী উপজেলার করগাঁওয়ে বিয়ে দিয়েছেন বাবা জজমিয়া। বড়ভাই আমির হামজা নিজ থেকে বিয়ে করে চট্টগ্রাম শহরে থাকেন। বাবা-মা ও ভাই-বোনের খোঁজ খবর রাখেন না।

akash_three_wheeler
দুই বোন, বাবা-মাকে নিয়ে ৫ সদস্যের সংসার এখন আকাশের কাঁধে। এক বোন নিকলী শহীদ স্মরণিকা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণীতে পড়ছে। শুক্রবার ১১ সেপ্টেম্বর কথা হয় শিশু আকাশের সাথে। সাংবাদিক জেনে তুলে ধরে তার পারিবারিক পরিস্থিতি।
খুব ইচ্ছা ছিল লেখাপড়া করার। বাবার জমি-জমা নেই, বড়ভাইও সংসারের কোনো খোঁজখবর রাখছেন না। বাবা অসুস্থ। তাই তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে বাধ্য হয়ে বাবার রিকশা চালানোর পেশায় যোগ দেয় শিশু আকাশ। বলছিলো, নিজে লেখাপড়া করতে না পারলেও বড়বোনকে কষ্ট করে লেখাপড়া করানোর ইচ্ছার কথা।
যে বয়সে শিশুরা স্কুলে যাওয়ার কথা, সে বয়সে রিকশা চালিয়ে পরিবার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। আকাশ আরো জানায়, স্থানীয় অবস্থাসম্পন্নদের কাছ থেকেও কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাইনি। এমনিতে এত বড় সংসার, তার ওপর বাবার চিকিৎসার খরচ। বাবা অসুস্থ শরীর নিয়েও যতটুকু সম্ভব উপার্জন করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি বাকি অতিপ্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তবু দমে যেতে চায় না এই কোমলমতি শিশুটি। চাওয়ারও তেমন কিছু নেই; শুধু তার বাবার জন্য পত্রিকার মাধ্যমে সবার কাছে দোয়া চায়, তিনি যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!