সাগরপথে ইউরোপ যাত্রায় নৌকা ডুবে ৩৫ বাংলাদেশির মৃত্যু

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

দালালের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে অবৈধভাবে নৌকায় সাগরপথে ইউরোপে যাওয়ার পথে সাতদিনে কয়েক দফা নৌকাডুবিতে ৩৫ বাংলাদেশি অভিবাসী মারা গেছেন বলে জানা গেছে। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা এক বাংলাদেশি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি আরও জানান, গত সপ্তাহে ৭০ জনের বেশি বাংলাদেশিসহ প্রায় পাঁচশ যাত্রী নিয়ে নিখোঁজ হয় লিবিয়া থেকে ছেড়ে যাওয়া চারটি ট্রলার। এর মধ্যে একটি ট্রলার দুই দিন পর লিবিয়া উপকূলে ফেরত গেলে ৩৫ বাংলাদেশিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। মধ্যসাগরে ২০ বাংলাদেশির সলিলসমাধি হলেও বাকি ১৫জন কূলে এসে প্রাণ হারিয়েছেন।

নিহতদের মধ্যে মৌলভীবাজারের বড়লেখার চান্দগ্রামের ফারুক হোসেন ও বিয়ানীবাজার পৌরসভার ইমন নামের দুই যুবকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে দেশটির রাজধানী ত্রিপলিতে বাংলাদেশের দূতাবাসের শ্রম সচিব আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে এর বেশি কিছু বলতে চাননি।

এখন প্রাণে বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশিরা চাচ্ছেন যাতে তাদের কোনো ধরনের হয়রানি না করে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।

গত আগস্ট মাসের জাতিসংঘের জরিপে দেখা গেছে, আফ্রিকান নারী-পুরুষ ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি এমন ঝুকিপূর্ণ যাত্রা করেন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান তিন নম্বরে রয়েছে।

নৌকাডুবির ঘটনায় বড়লেখা ও বিয়ানীবাজারের একাধিক তরুণ নিখোঁজ রয়েছেন বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। সরেজমিনে ওই দুই তরুণের বাড়ি গেলে তাদের পরিবারে আহাজারি চলতে দেখা যায়।

ইমনের ছোটভাই ঝুমন জানান, গত ৩ মাস আগে তার ভাই দালালের মাধ্যমে লিবিয়া পাড়ি জমান। ইমনকে ইউরোপ পাঠানোর উদ্দেশ্যে এক দালাল তাদের কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর পর দালাল অনেকের সঙ্গে তার ভাইকেও সাগরপথে নৌকায় ইউরোপ পাঠায়।

এর আগে বড়লেখার চান্দগ্রামের নিখোঁজ তরুণ ফারুকের বড়ভাই মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা সালিক আহমদ বলেন, নৌকায় ইউরোপ যাত্রার পর থেকে তার ভাইয়ের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি। দালালও ফোন বন্ধ করে রেখেছে। ভাইয়ের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

ফারুক ও ইমন

সূত্র : সাগরপথে ইউরোপ যাত্রা, নৌকা ডুবে ৩৫ বাংলাদেশির মৃত্যু  [যুগান্তর, ২৫ জুন ২০১৮]

Similar Posts

error: Content is protected !!