মহাস্থান (বগুড়া) প্রতিনিধি ।।
বগুড়া সদরের গোকুল ইউনিয়নের চাঁদমুহা উত্তরপাড়া গ্রামের কিশোরী আছিয়া আক্তার (১৬) তার সন্তানের পিতৃপরিচয়ের আশায় আইন-আদালতসহ সকলের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। গ্রাম্য মাতব্বরদের শাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে সমাজচ্যুত হয়েছে অসহায় পরিবার।
বগুড়া সদর থানায় মামলা সূত্রে প্রকাশ, বগুড়া সদরের গোকুল ইউনিয়নের চাঁদমুহা উত্তরপাড়া গ্রামের দিনমজুর রহিম বাদশার মেয়ে আছিয়া আক্তারের সাথে সোনাতলা উপজেলার পূর্ব সুজাতপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের পুত্র স্বপন মিয়া (২৭) বিয়ের প্রলোভনে গত বছরের ফেব্রুয়ারির ২ তারিখ রাতে আত্মীয়তার সুযোগে কিশোরী আছিয়ার ঘরে প্রবেশ করে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় আছিয়া গর্ভবতী হলে আছিয়ার পরিবার স্বপনকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে আছিয়ার অসহায় বাবা রহিম বাদশা গ্রামের মাতব্বরদের কাছে বিচার না পেয়ে বাদী হয়ে গত নভেম্বরের ২৬ তারিখে বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন; যার নং ১১৮-১৩২৯। মামলা দায়েরের পর গ্রাম্য মাতব্বর একই এলাকার মৃত ইব্রাহীমের পুত্র আব্দুস সাত্তার (৬০), লালমনের পুত্র আলম (৪০), মৃত ছবেদ আলীর পুত্র হাফিজার রহমানসহ (৪৫) এলাকার আরো বেশ কয়েকজন মাতব্বর আছিয়া ও তার পরিবারকে সমাজচ্যুত করে। এমনকি আছিয়ার বৃদ্ধ পিতা রহিম বাদশাকে মসজিদে নামাজ না পড়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করে এবং কেউ যাতে তাদের সাথে কোনো প্রকার কথাবার্তা ও সামজিক লেনদেন না করে।
মাতবরেরা ধর্ষণকারীর বিচার বা পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগিতা না করে উল্টো মেয়ের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখে। এ ঘটনায় আছিয়ার পিতা গ্রাম্য মাতবর ও স্বপনসহ তাদের সহযোগীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য আইন-আদালতসহ প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। কবে পাবে কিশোরী আছিয়া তার সন্তানের পিতৃপরিচয়? কবে পাবে রহিম বাদশা সমাজের মাতবরের হাত থেকে সামাজিক মর্যাদা? এভাবেই কি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে সমাজের মাতবরেরা অবিচার করতে থাকবে?
এ ব্যাপারে গোকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সওকাদুল ইসলাম সরকার সবুজের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ঘটনা সম্পূর্ণ সত্য। ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় মামলা হয়েছে। আসামিকে ধরার জন্য পুলিশের ওপর চাপ অব্যাহত রয়েছে। যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরকে আটক করে কঠোর শাস্তি প্রদানের জন্য প্রশাসনের প্রতি ভুক্তভোগী মহল আকুল আবেদন জানান।