মাহমুদ আল আজাদ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি ।।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা দক্ষিণ মাদার্শা এলাকায় তিন শ্যালকের কিল ঘুষিতে আনোয়ার হোসেন (৪০) নামের এক ঘরজামায়ের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২২ জুলাই ২০১৮) দিবাগত রাত ৯টার সময় উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নস্থ মাহলুমা বাজারসংলগ্ন মৌলভী ওবায়দুর রহমানের বাড়িতে এ ঘটনাটি সংগঠিত হয়। শোর-চিৎকার শুনে এলাকার বিক্ষুব্ধ জনগণ ঘটনায় জড়িত তিন শ্যালককে উত্তম মধ্যম দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। নিহত আনোয়ারের ছেলে মোঃ সুমন বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং (৫৬) তাং-২৩-৭-১৮ইং।
অভিযুক্ত তিন শ্যালক হল- ফার্নিচার মিস্ত্রী জাহাঙ্গীর (২৪), দর্জি নজরুল ইসলাম (৩২) ও মোঃ আলমগীর (৩০)। নিহত মো. আনোয়ার (৪০) নাটোরের লালপুর থানাধীন গোপালপুর গ্রামের মতিন আহমদের পুত্র বলে জানা গেছে। আনোয়ার পেশায় টেম্পুচালক। দীর্ঘ সময় তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মাদার্শা এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই হিসেবে বসবাস করে আসছেন।
থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় লোকজন থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ঘাতক তিন শ্যালককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। রোববার বিকেলে আনোয়ার তার স্ত্রীকে বিদেশে যাওয়ার জন্য তার ভাইদের কাছ থেকে টাকা চাইতে বলে। স্ত্রী মনি বেগম স্বামীর কথায় তার তিন ভাইদের কাছ থেকে টাকা খুঁজলে একপর্যায়ে তারা বলেন, গত কিছুদিন আগে তোমার ছেলের জন্মের সময় ডাক্তার খরচ বাবদ ২৫ হাজার টাকা দিয়েছি। এখন টাকা কিভাবে দেব?
বিষয়টি স্বামীকে বললে মনি বেগমের ভাইদের সামনে আনোয়ার উত্তেজিত হয়ে স্ত্রীকে গালিগালাজ করলে বোনের উপর স্বামীর এমন আচরণ সহ্য করতে না পেরে রাতে ৩ ভাই একত্রিত হয়ে আনোয়ারকে কিল ঘুষি লাথি মেরে গুরুত্বর আহত করে। এর মধ্যে শ্যালক জাহাঙ্গীর টর্চলাইট দিয়ে আনোয়ারের মাথায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুরুতর আহত অবস্থায় আনোয়ারকে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে তার অবস্থার বেগতিক দেখলে দ্রুত অন্য একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৮ বছর আগে খালাতো ভাই আনোয়ারের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মনি বেগম। সংসারে ৩ পুত্রসন্তান রয়েছে। বিদেশে যাওয়ার জন্য তার স্বামী আনোয়ার প্রায় সময় মারধর করতো। এ নিয়ে তাদের সংসারে ঝগড়া বিবাদ চলে আসছিল। রাতে তার ভাইয়েরা স্বামী আনোয়ারকে কিল থাপ্পড় মারলে সে মারা যায়। নিহত আনোয়ারের আরো একটি সংসার রয়েছে বলেও জানান তারা।
হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ বেলাল উদ্দীন জাহাঙ্গীর জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ ভাইকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক মর্গে পাঠানো হয় এবং দুপুরে আটককৃতদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।