মাহমুদ আল আজাদ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি ।।
হাটহাজারী পৌরসভায় মডেল থানার পাশের মরা ছড়াটিতে অপরিকল্পিতভাবে সরু নালা (বক্স ড্রেন) নির্মাণের কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় এ নিয়ে বেশ সোচ্চার পৌরবাসী। মঙ্গলবার (৩১ জুলাই ২০১৮) সকালে অপরিকল্পিতভাবে বক্স ড্রেন নির্মাণ তথা পৌর এলাকায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা থেকে বাঁচতে পৌরসভা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এবং পৌরসভার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথকভাবে প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও পৌর প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। এ সময় ওই ছড়ার জলাবদ্ধতা থেকে পরিত্রাণ পেতে আন্দোলনকারীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ পরবর্তী প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদানে স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ নেয় স্থানীয় এলাকাবাসী, পাশাপাশি পৌরসভা উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দসহ পৌর এলাকার নানা শ্রেণি-পেশার জনসাধারণ।
হাটহাজারী পৌরসভাস্থ মডেল থানার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মরা ছড়া নামক একটি ছড়াকে পৌরসভার পক্ষ থেকে বক্সড্রেন নির্মাণ করার কারণে কাচারী সড়কের আশপাশের জায়গাগুলো বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকে। ফলে উক্ত এলাকার লোকজন পানি থেকে রক্ষার জন্য নব নির্মিত বক্সড্রেন ভেঙ্গে ফেলার দাবিতে পৌরসভা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে বাসস্টেশন চত্বরে ও নাগরিক কমিটির উদ্যোগে পৌর কার্যালয়ের সামনে পৃথক পৃথক স্থানে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সভা শেষে বক্সড্রেন ভেঙ্গে ফেলার দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ম. জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জাকির ও আওয়ামীলীগ নেতা ইকবাল বাহার চৌধুরী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোঃ নুরুল আলম, উদয় সেন, মোঃ শফিসহ পৌর আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।
অপরদিকে হাটহাজারী পৌর নাগরিক কমিটির উদ্যোগে হাটহাজারী পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা বলেন, অবিলম্বে পৌরসভা কর্তৃক মরা ছড়ার উপর যে বক্সড্রেন নির্মাণ হচ্ছে তা ভেঙ্গে দিয়ে উক্ত ছড়াকে খনন করে বন্যার পানি যাতায়াতের সুযোগ সুবিধা করে দেয়ার জন্য দাবি জানান। এদিকে প্রতিবাদকারীরা মিছিল সহকারে পৌর প্রকৌশলী বেলাল আহমদ খানের অপসারণের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিলও করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, পৌরসভা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক ওজাইর আহমদ হামীদি, আবদুল খালেক, মোঃ এনাম মোঃ শোয়াইব সহ বিভিন্ন শ্রেণীর পেশাজীবি মানুষ।
এ ব্যাপারে প্রকৌশলী বেলাল আহমদ খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, উক্ত ড্রেনের কাজ এখনো শেষ হয়নি। ড্রেনটির পশ্চিম প্রান্তে মাটি দিয়ে তিনটি বাঁধ দেয়া হয়েছে এবং ড্রেনের ভিতরে কয়েক হাজার সেন্টারিংয়ের বাঁশ রয়েছে। পাশাপাশি কাচারী সড়কসংলগ্নে জগন্নাত বাড়ির ব্রিজের মুখে পাঁচ ফুট উঁচু নিচু রয়েছে। যার কারণে পানি নিষ্কাশনে বাঁধা হয়ে দোকান ও লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
তিনি আরো জানান, বর্তমানে যতটুকু কাজ হয়েছে সেটুকুর সেন্টারিংয়ের বাঁশ তুলে নেয়া হলে এবং জগন্নাথ বাড়ির সেদিকে ৬ ফুট মাটি খনন করে সমান করে দিলে পানি নিষ্কাশনে বাঁধা থাকবে না। আগামী কাজে জগন্নাথবাড়ির পর থেকে খোলা ড্রেন নির্মাণ করা হলে পানি নিষ্কাশনে কোন বাঁধা থাকবে না। কাজ শেষ হলে উক্ত ড্রেনের পশ্চিম দিক থেকে বাঁধগুলো কেটে দিলে এবং সেন্টারিংয়ের বাঁশ তুলে নিলে পানি নিষ্কাশনে সমস্যা হবে না।
এদিকে পৌর প্রকৌশলী বেলাল আহমদ খাঁনের বিরুদ্ধে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি নানান অভিযোগের কথা জানান। দ্রুততম তাকে হাটহাজারী থেকে অপসারণ করে দিতে জোর দাবি করেন।