মাহমুদ আল আজাদ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি ।।
হাটহাজারীতে শিশু আরিফকে অপহরণকারী দম্পতিকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট ২০১৮) সন্ধ্যা ৭টার দিকে হাটহাজারী পৌরসভাস্থ আলিপুর এলাকার নতুন কাজী বাড়ির ভাড়াঘর থেকে হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাসুমের নেতৃত্বে তাদের আটক করা হয়। আটককৃত মোঃ শায়েক হোসেন রিমন (২৬) পৌরসভার আদর্শগ্রাম উত্তর পাহাড় এলাকার মোঃ সেলিম চৌধুরী প্রকাশ (সেলিম চৌকিদার) পুত্র ও তার স্ত্রী লাকি আক্তার (১৯) ফটিকছড়ি থানাধীন নাজিরহাট পৌরসভার ছুরকারহাট এলাকার ফায়া তালুকদার বাড়ির মোঃ নাছির উদ্দিনের কন্যা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অপহরণের আটদিনের মাথায় দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে শিশুটিকে নির্দিষ্ট স্থানে মা-বাবার কাছে ফেরৎ দিলেও অবশেষে পুলিশের তৎপরতায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপহরণের এক মাসের মাথায় অপহরণকারী দম্পতিকে আটক করতে পুলিশ সক্ষম হয়। শিশুটিকে জীবিত ফেরৎ পাওয়ার লক্ষ্যেই মূলত পুলিশ ঝুঁকি না নিয়ে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপহরণকারীকে আটক করে বলে জানায়।
এ ব্যাপারে হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাসুম সাংবাদিকদের বলেন, শিশু আরিফুল ইসলাম গত ২ জুলাই নিখোঁজ হয়েছে এ ধরনের একটি নিখোঁজ ডায়রি পাওয়ার পর আমরা শিশুটি উদ্ধারে মাঠে নেমে পড়ি। শিশুর জীবনের ঝুঁকি না নিয়ে শিশুটিকে জীবিত উদ্ধারে আমরা খুবই সতর্কতার সাথে কাজ করতে থাকি। ১০ জুলাই অপহরণের একটি মামলা এবং পরিবারের পক্ষ থেকে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে শিশুটিকে উদ্ধারের পর কল লিস্টের মাধ্যমে সামনে এগোতে থাকি।
বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অবশেষে অপহরণের মূল হোতাসহ দম্পতিকে আমরা আটক করি। এ সময় মুক্তিপণের টাকা দিয়ে কেনা একটি মোটরসাইকেল, টাকা আদায়ে ব্যবহৃত মোবাইল এবং মূল হোতার নিজ হাতে লিখিত কথোপকথনের লেখা একটি ডায়রী উদ্ধার করি। তিনি বলেন, তারা অপহরণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। মায়ের বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণের টাকা পরিশোধ করতে এ কাজটি করেছেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানায়। এদিকে মূল হোতা শায়েকের চাচাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
শায়েক এর কয়েকমাস আগেও ভুয়া একটি নিউজ দিয়ে তার চাচার পরিবারের জন্য পৌরসভা কার্যালয় থেকে ২০ হাজার টাকা নেয়। মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে এ টাকা নিয়ে এলাকায় নানান কৌতূহল সৃষ্টি হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে তার চাচার বসতঘরের টিনের চাল উড়ে গেলে ভুয়া নিউজ ফেসবুকে পোস্ট হলে সেটা পৌর কর্তৃপক্ষের নজরে এলে তার চাচার পরিবারকে ২০ হাজার টাকা সহযোগিতা প্রদান করেন পৌর প্রশাসক। কিন্তু যাদের সহযোগিতা পাওয়ার যোগ্য তারা না পেয়ে সচল এই পরিবার কিভাবে টাকা পায় সে নিয়েও এলাকায় বেশ কিছুদিন গুঞ্জন ছড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২ জুলাই উপজেলার মেখল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডস্থ জাফরাবাদ মাদ্রাসার ছাত্র এবং একই ইউনিয়নের জাফরাবাদ রহিমপুর গ্রামের মোঃ সেলিম ড্রাইভারের পুত্র মোঃ আরিফুল ইসলাম (৫) সকাল সোয়া এগারটার দিকে মাদ্রাসা ছুটি শেষে বাড়ি যাওয়ার পথে অপহরণ হয়েছিল।