ছাত্রদলকে গতিশীল করতে নতুন কমিটি ঘোষণা শিগগিরই

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

ছাত্রদলকে গতিশীল করতে শিগগিরই নতুন কমিটির ঘোষণা আসছে। নির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ ঠিক না হলেও খুব অল্প সময়ের মধ্যে ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব আসবে বলে সংগঠনের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন।

ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠন নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই দৌড়ঝাঁপ চলছে। কিন্তু কিছুতেই আলোর মুখ দেখছে না নতুন কমিটি। সম্প্রতি ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণার পর ছাত্রদলের কমিটি গঠন নিয়ে নতুন করে তোড়জোড় শুরু হয়।

এছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সক্রিয় আন্দোলনে যাওয়ার আগেই ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণা দিতে চায় বিএনপির হাইকমান্ড। কারণ ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির চেইন অব কমান্ড অনেকটা ভেঙে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। সাংগঠনিক কার্যক্রমে নেমে এসেছে স্থবিরতা। তাই সংগঠনে গতি ফেরাতে নতুন কমিটির প্রতি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কমিটি গঠনের পর পদবঞ্চিতদের সম্ভাব্য বিদ্রোহের আশঙ্কা থাকলেও ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। কারণ ঈদুল আজহার পরে সক্রিয় আন্দোলনে যাওয়ার আগে সব ইউনিট কমিটি গঠনের পাশাপাশি বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের মেয়াদোত্তীর্ণ কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠন এবং আংশিক কমিটিগুলোও পূর্ণাঙ্গ করার বিষয়ে দলের হাইকমান্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দলের সাংগঠনিক পুনর্গঠন আমাদের চলমান প্রক্রিয়া। দলকে শক্তিশালী করতে হলে অবশ্যই সংগঠনগুলোকে ঠিক করতে হবে।

তিনি বলেন, ছাত্রদলের বর্তমান কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ এটা আমাদের জানা আছে। তবে এটা ঠিক নতুন কমিটি গঠন করতে পারলে সংগঠনে গতিশীলতা আসবে।

গত ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রাজিব আহসানকে সভাপতি আর মামুনুর রশিদ মামুনকে সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রদলের ১৫৩ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ৭৩৬ সদস্যের ‘ঢাউস’ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।

ছাত্রদলের খসড়া গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই বছর মেয়াদি কমিটি ঘোষণা করা হয়। সে হিসেবে ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির মেয়াদ ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর শেষ হয়েছে। বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় পদপ্রত্যাশীরা নতুন কমিটির দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। বর্তমান কমিটির প্রতি অনাস্থা জানানো হয়। নতুন কমিটির দাবিতে ছাত্রদলের এক নেতা নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালের নিচতলায় অনশনও পালন করেন। কিন্তু দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর কমিটি গঠন প্রক্রিয়া থমকে যায়।

পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে ছাত্রদলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সংগঠনের অনুসারীরা। তাই নতুন কমিটির দাবি আবারও সামনে নিয়ে আসছে সংগঠনের ভেতরের ও বিএনপির নেতাকর্মীরা।

বিএনপির সর্বশেষ ষষ্ঠ কাউন্সিলে রাজীব, মামুন ও আকরামকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়। নতুন কমিটিতে পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন, বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি আলমগীর হাসান সোহান, নাজমুল হাসান, ইখতিয়ার রহমান কবির, আবু আতিক আল হাসান মিন্টু, মামুন বিল্লাহ, জহিরুল ইসলাম বিপ্লব, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, বর্তমান কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ রাসেল, কাজী মোকতার হোসেন, মিজানুর রহমান সোহাগ, নূরুল হুদা বাবু, আবদুর রহিম হাওলাদার সেতু, আবুল হাসান, মফিজুর রহমান আশিক, শামছুল আলম রানা, মেহবুব মাসুম শান্ত, বায়েজিদ আরেফিন, ওমর ফারুক মুন্না, মির্জা ইয়াসিন, গোলাম মোস্তফা, দফতর সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আল মেহেদী তালুকদার প্রমুখ। এদের মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে সভাপতি থেকে সাংগঠনিক সম্পাদক পর্যন্ত পাঁচজনের ‘সুপার ফাইভ’ কমিটির ঘোষণা আসতে পারে।

জানতে চাইলে ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আলমগীর হাসান সোহান বলেন, ‘বর্তমান কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। তাই আমাদের নেত্রীর (খালেদা জিয়া) মুক্তির জন্য সক্রিয় আন্দোলন জোরদারে ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে ছাত্রদলের কমিটি গঠন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এখন এতো হিসেব করে লাভ নেই, ত্যাগী নেতাদের নিয়ে কমিটি দিয়ে আন্দোলন সফল হওয়ার পর সব হিসেবই করা যাবে। তাই আমরা দ্রুত কমিটি ঘোষণার জন্য দাবি জানাচ্ছি।’

ছাত্রদলের আরেক সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, ‘কমিটি গঠন নিয়ে তোড়জোড় চলছে। এই হচ্ছে তো আবার এই থেকে যাচ্ছে। বুঝছি না কমিটি কবে নাগাদ ঘোষাণা করা হবে। তবে আমাদের নেত্রীর মুক্তির আন্দোলন জোরদার করতে কমিটি ঘোষণা করা উচিত।’

ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী বলেন, ‘তিন বছরের বেশি হলো বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখন পার্টির হাইকমান্ড সিদ্ধান্ত নিবেন কবে নাগাদ নতুন কমিটি ঘোষণা করবেন।’

সূত্র : পরিবর্তন.কম, ৭ আগস্ট ২০১৮

Similar Posts

error: Content is protected !!