আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
স্বামী মারা গেছে বিদেশ-বিভুঁইয়ে এমন খবরের অনেক দিন পর অন্যত্র বিয়ে হয় স্ত্রীর। তারও অনেক দিন পর জানা গেল স্বামী মহিউদ্দিন মরেননি। তিনি বর্তমানে মিয়ানমার কারাগারে বন্দি।
তিন বছর পর স্বামী বেঁচে থাকার খবর স্ত্রীর কানে পৌঁছলে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের মছদিয়া আকবর পাড়ায়।
মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ওই এলাকার মোস্তাক আহমদের ছেলে। পেশায় কাঠমিস্ত্রি। প্রেমের সম্পর্কের পর ২০১৫ সালে একই উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের এক তরুণীকে বিয়ে করেন মহিউদ্দিন। বিয়ের পর থেকে তিনি শ্বশুরবাড়িতে থাকা শুরু করেন। কিছুদিন পর মহিউদ্দিন নিখোঁজ হন।
নিখোঁজের মাস দুয়েক পর মহিউদ্দিন তার শ্বশুর ও বাবার মোবাইলে ফোন করে জানান, মানব পাচারকারীরা তাকে অপহরণ করে থাইল্যান্ডের একটি পাহাড়ে আটকে রেখে নির্যাতন চালাচ্ছে। এ সময় তার সেই মোবাইল থেকে একজন মোটা অংকের টাকা দাবি করে। নইলে ছেলেকে জীবিত ফিরে পাওয়া যাবে না বলে হুমকি দেয়। মহিউদ্দিনের বাবা ঋণ করে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা পাঠান।
এর কিছুদিন পর অপরিচিত একটি নম্বর থেকে ফোন করে পরিবারে খবর দেয়, মহিউদ্দিন আর বেঁচে নেই। মানব পাচারকারীরা তাকে মৃত ভেবে সমুদ্রে নিক্ষেপ করেছে। পরে মহিউদ্দিনের কুলখানিও দেয়া হয়। ওদিকে তার স্ত্রীর অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়।
চলতি মাসের শুরুর দিকে মিয়ানমারের রেঙ্গুন থেকে এক ব্যক্তি লোহাগাড়ার আধুনগরের মছদিয়ায় তার পূর্বপুরুষের বাড়ি খুঁজতে আসেন। এ সময় তিনি মহিউদ্দিনের কথা বলেন। মিয়ানমারের ওই লোকটি জানান, মহিউদ্দিন মিয়ানমারের রেঙ্গুন কারাগারে বন্দি আছেন।
মহিউদ্দিন তাকে বলেছেন, আধুনগর মছদিয়া গ্রামে গিয়ে আমার কথা বললেই লোকজন চিনবে। অনেক দিন আগে সেনাবাহিনীর লোকজন তাকে নদী থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে সে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে রেঙ্গুন কারাগারে বন্দি আছেন।
মহিউদ্দিনের আত্মীয় মো. হারুন মোবাইল ফোনে জানান, মহিউদ্দিনের আইডি কার্ড ও তথ্য-উপাত্ত নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে বিজিবির কক্সবাজার রিজিওনাল কমান্ডারকে আদেশ দিলে নানা প্রক্রিয়া শেষে মহিউদ্দিন ফিরে আসতে পারে বলে আমরা আশা করছি।
সূত্র : যুগান্তর, ১১ আগস্ট ২০১৮