আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকা প্রায় চূড়ান্ত। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এই তালিকা প্রকাশ করা হবে। ক্ষমতাসীন দলের সভাপতিমণ্ডলীর একাধিক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তারা জানান, নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার আগেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের দলের হাইকমান্ড থেকে গোপনে ‘সবুজ সংকেত’ দেয়া হবে। প্রার্থীর কোনো দুর্বলতা থাকলে নির্বাচনের আগেই তা কাটিয়ে তোলার জন্য এই সংকেত দেয়া হবে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৮০ থেকে ২০০টি আসনে জয়লাভ করতে পারেন- এমন প্রার্থীদেরই মনোনয়ন দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। এ ক্ষেত্রে সাবেক সংসদ সদস্য, অপেক্ষাকৃত তরুণ, জনপ্রিয়, ক্লিন ইমেজের প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একাধিক সদস্য বলেন, একটি নির্বাচন শেষ হলেই পরবর্তী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয় আওয়ামী লীগে। সেক্ষেত্রে দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন এমন সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকাও আমাদের নেত্রীর হাতে থাকে।
নির্বাচনী আমেজ শুরু হওয়ার আগেই অন্তত শতাধিক আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা আমাদের নেত্রীর ল্যাপটপে থাকে- যোগ করেন তারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৩ ও ৩০ জুন এবং ৭ জুলাই- এই তিন দফায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে বিশেষ বর্ধিত সভার মাধ্যমে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করে আওয়ামী লীগ। বর্ধিত ওই সভাগুলোতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তৃণমূল থেকে বর্ধিত সভায় যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীরাও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী নিয়ে নিজেদের আকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরেন দলীয় প্রধানের কাছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী নেতারা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে। তাই প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে উইনেবলদেরই (জয়ী হওয়ার মতো) গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সরকারি সংস্থা, দলীয় নেতাকর্মী, দলের সভাপতির নিজস্ব মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই চূড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের একজন সদস্য জানান, সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়ার কাজ করেছে আওয়ামী লীগের গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)। এছাড়া গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (আরডিসি) মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রার্থীদের জনপ্রিয়তার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হয়েছে। সব জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতেই প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক এ প্রসঙ্গে বলেন, দলের চূড়ান্ত মনোনয়ন যিনি পাবেন, তাকে গোপনে গ্রিন সিগন্যাল (সবুজ সংকেত) দেয়া হবে এবং তা গোপন রাখতে বলা হবে।
দলটির অন্যতম সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, নির্বাচনের আগে প্রার্থীর কোনো দুর্বলতা থাকলে তা কাটিয়ে ওঠার জন্য গোপনে সিগন্যালও দেয়া হবে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ প্রস্তুত। ইতোমধ্যে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকা থেকে তৃণমূলের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। দলের সভাপতি বিভিন্ন উইং থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন। এসব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়া হবে।
‘মোটামুটি সেই তালিকাও প্রস্তুত, প্রার্থিতাও প্রায় চূড়ান্ত। তফসিল ঘোষণার পরপরই মনোনয়ন কারা পাচ্ছেন, তা প্রকাশ করা হবে’- যোগ করেন তিনি।
সূত্র : জাগো নিউজ, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮