নিকলীতে হরচরণ সাধুর স্মরণসভা অনুষ্ঠিত

বিশেষ প্রতিনিধি ।।

নিকলীতে বহুল শ্রদ্ধেয় হরচরণ বর্মণ (শ্মশ্বানের গোসাঁই)-এঁর স্মরণসভা রোববার (৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮) রাতে উপজেলার কেন্দ্রীয় শ্মশ্বানখলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। হিন্দু, মুসলিম কয়েকশত হরচরণ ভক্ত সারা দিন ও রাতভর নানা আয়োজনে দিবসটিকে উদযাপন করেন।

শতবর্ষ পূর্বে বর্মণকূলে জন্ম নেয়া মহী পুরুষ আধ্যাত্মিক সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন। দেশ-বিদেশের নানা জায়গা ভ্রমণ করেন। এক সময় থিতু হন নিকলী কেন্দ্রীয় শ্মশ্বানখলায়। মরদেহ সৎকার স্থান ও দর্শনার্থী স্থান হিসাবে শ্মশ্বানখলাটির রুপায়ন করেন। ফল, ফুল আর নানারকম গাছগাছালি রোপনের ভেতর দিয়ে চিতায় ফেলে যাওয়া মাটির হাঁড়ি গাছে টানিয়ে গড়ে তোলেন পাখিদের অভয়াশ্রম।

নিকলী উপজেলা সদরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত সোয়াইজনী নদীর পশ্চিম পাড়ের দ্বীপ শ্মশ্বানটি হয়ে উঠে পাখি, ফুল-ফল শোভিত এক নান্দনিক স্থান। সাধু সঙ্ঘের ভজনালয়। ভ্রমণপিপাসু আর ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য উন্মুক্ত গ্রামীণ পর্যটন।

ভিক্ষাবৃত্তি (নিত্য প্রয়োজনের বেশি নয়) করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। নিজের আহার্য থেকেই নিত্য পাখিদের খাদ্য সরবরাহও করতেন। পাখি আর নিজের পোষা কুকুর কালুর সাথে তাঁর কথোপকথনের গল্প অনেকের চোখেই ধরা পড়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। এমনকি তাঁর কুকুর কালুর একা খেয়া ডেকে পারাপার হওয়া ছিলো এলাকাবাসীর স্বাভাবিক ব্যাপার।

ছোটখাট দেহশৈষ্ঠবের এই সাধু কালো কুচকুচে বর্ণের হলেও নিয়মিত আসন করা ছিপছিপে গড়ন ছিলো দেখার মতো। সদালাপি হরচরণ এলাকাবাসীর কাছে যেমন ছিলেন আদর্শ তেমনি শিশুদের কাছেও ছিলেন প্রিয় ব্যক্তিত্ব। উপজেলা জুড়ে হিন্দু ছাড়াও মুসলিম ঘরানার বহু মানুষ তাঁর ভক্ত। আজ থেকে বছরবিশেক আগে ২৩ ভাদ্র স্বঘোষিত সময়ে তিনি অন্তর্ধান করেন।

Similar Posts

error: Content is protected !!