আবদুল্লাহ আল মহসিন ।।
ভাটি এলাকায় কার্তিক মাস এলে দেশী মাছ ধরার মহোৎসব দেখা যায়। এ সময় হাওরের পানি শুকিয়ে যায়। খাল-বিল থেকে বর্ষার পানি প্রবল স্রোতে নামতে থাকে। প্লাবণ ভূমি থেকে পানি চলে যাওয়ার সাথে সাথে মাছও নামতে থাকে। আর সে সময় জেলেরা নানা ফাঁদ তৈরি করে মাছ ধরে। নিকলী উপজেলায় ছোট-বড় ১০টি নদী ৩৫টিরও বেশি খাল-বিল ও প্রায় ১১ হাজার হেক্টর পরিমাণ প্লাবন ভূমি হাওর রয়েছে। এখন এই সময়ে সোয়াইজনী, রোদা, ধনু, নরসুন্দা, ঘোড়াউত্রার বাঁকে বাঁকে জাল ফেলেছে জেলেরা। শত শত ঝাপি জাল, কড়া জাল, বেড় জাল, বানর জাল, ঠেলাজাল, কোণা জাল, ধর্মজাল দিয়ে হাজারো জেলে রাত দিন মাছ ধরছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন স্থানে বর্শি ফেলে কোথাও বানা ফেলে কোথাও বা পলো দিয়ে মাছ ধরছে। তবে আগের মত মাছের আধিক্য না থাকলেও জৌলুস ফুরিয়ে যায়নি। আগের দিনের কার্তিক মাস এলে মাছ ধরার স্মৃতি সম্পর্কে দামপাড়া গ্রামের আঃ হাফিজ বলেন, কার্তিক মাস এলে বাড়িতে নৌকা ভরে মাছ নিয়ে ফিরতাম। এখন সেই মাছ আর নেই। সরেজমিনে নতুন বাজার, রোদার পুড্ডা বাজার মাছের আড়তে গিয়ে দেখা যায় মাছ কেনা-বেচার ভীড়। যার বেশির ভাগ মাছ আহরণ করা হাওর নদী থেকে। বোয়াল, পুটি, কৈ, শিং, মাগুর, শোল, গজার, বাউস, গোলসা, টেংরা, কাকিলাসহ প্রায় ৫০ প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। মাছ সংরক্ষণের তেমন ব্যবস্থা না থাকায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত মাছ শুটকি করে সংরক্ষণ করা হয়। কার্তিক মাসের মাছ দিয়েই শুটকির চাহিদাও মেটানো হয়। শুটকি তৈরি করার জন্য এ সময় ডাঙ্গি তৈরি করা হয়। হাওরের মৎস্যভাণ্ডার কার্তিক মাসেই তার পরিপূর্ণ রূপটি ফিরে পায়।