আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
বাইরে বের হলেই গাড়ির শব্দ আর ধোঁয়ায় হাঁসফাঁস অবস্থা হয় আমাদের। অথচ জানেন এমন এক শহর আছে, যেখানে গাড়ি নিষিদ্ধ। স্পেনের সেই ছোট্ট শহর পন্টেভেদ্রা। দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে ওই শহরে গাড়ি নিষিদ্ধ। খুব প্রয়োজন ছাড়া এখানে গাড়ি চলাচল করে না। শহরের বাসিন্দারা হেঁটে বা বাই-সাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছান। শহরটা ছোট হওয়ায় বাই-সাইকেলে চড়েই তা পার করা যায়।
১৯৯৯ সাল থেকে ওই শহরে গাড়ি নিষিদ্ধ। মিগুয়াল অ্যাঙ্গসো ফারনানডেজ লরেস পন্টেভেদ্রার মেয়র। মোট চারবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে প্রথমবার মেয়র হওয়ার পরই তিনি গাড়ি নিষিদ্ধ করে দেন।
যানজট আর দূষণমুক্ত করে পন্টেভেদ্রাকে বাসযোগ্য করে তোলার পরিকল্পনা নেন তিনি। আর শুধু সে কারণেই গাড়ি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তাতে জনগণ সাড়াও দেন। সেজন্য ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তাকেই মেয়র নির্বাচিত করা হয়েছে।
১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ৩০ জনের। এর পরের ১০ বছর অর্থাৎ ২০০৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা মাত্র ১০ জন। এমনকি ২০০৯ সালের পর থেকে একজনও সড়ক দুর্ঘটনার কারণে প্রাণ হারাননি।
পায়ে হেঁটে আর বাই-সাইকেলে যাতায়াত করার জন্য দূষণের মাত্রাও প্রচুর কমে গেছে। পন্টেভেদ্রার বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণও হ্রাস পেয়েছে।
গাড়ির ভিড়ে অন্যান্য শহরে যেমন নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়, রাস্তায় পা ফেলার জায়গা পাওয়া যায় না। পন্টেভেদ্রায় ঠিক তার উল্টো ঘটনা ঘটে। গাড়ির সংখ্যা কমে যাওয়ায়, মানুষের বসতি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৯৯ সালে গাড়ি নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে এই শহর ১২ হাজার নতুন বাসিন্দা পেয়েছে।
যাদের গাড়ি ছিল সেই গাড়িগুলোর কী হলো? সঠিক জানা নেই। তবে ১৯ বছর আগে যাঁরা গাড়ি কিনেছিলেন তাদের অনেকেই গাড়ি বিক্রি করে দেন।
অনেকেই জরুরি পরিস্থিতির জন্য রেখে দেন। খুব প্রয়োজন ছাড়া ব্যবহার করা যায় না। আর এসবের কারণে গাড়ি মুক্ত পন্টেভেদ্রা ২০১৪ সালে জাতিসংঘের হাবিট্যাট পুরস্কারও পেয়েছে।
সূত্র : কালের কণ্ঠ, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮