আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
যেদিন আপনারা প্রথমবার একে অপরকে ভালোবাসার কথা জানিয়েছিলেন, বাগদান বা আশীর্বাদ হয়েছিল, অথবা বিয়ের দিন… সেগুলো যে কোনও দম্পতির জীবনেই খুব বড়ো ব্যাপার। কিন্তু তা ছাড়াও এমন অনেক ছোট ছোট অনুষঙ্গ থাকে যা দু’জন মানুষের বাঁধনটাকে আরও দৃঢ় করে। ছোট ছোট একাধিক ঘটনা দিয়েই পোক্ত হয় সম্পর্কের ভিত।’
মাইলফলক : এ আমার বয়ফ্রেন্ড
পরিস্থিতি : আপনাদের মধ্যে একটা স্টেডি সম্পর্ক আছে
যখনই কোনও বন্ধু বা বান্ধবী সর্বসমক্ষে আপনাকে তাঁর বয়ফ্রেন্ড অথবা গার্লফ্রেন্ড বলে অভিহিত করেন তার মানে হচ্ছে, তিনি আপনার সঙ্গে যথেষ্ট খুশি এবং প্রকাশ্যে সে কথা ঘোষণা করতেও তাঁর মনে কোনও দ্বিধা নেই। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস ও নিরাপত্তাবোধ বাড়ে, সম্পর্কও এগিয়ে যায় বিনা বাধায়।
মাইলফলক : প্রথমবার বিয়েবাড়ি যাওয়া
পরিস্থিতি : মনে মনে স্থির করে ফেলেছেন, ইনিই আপনার জীবনসঙ্গী হবেন
নতুন কারও সঙ্গে আলাপ হওয়ার পর বন্ধুবান্ধবদের আড্ডায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া আর কোনও পারিবারিক বিয়েবাড়িতে সেই মানুষটিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে সব আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় করিয়ে দেওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। বিয়েবাড়িতে একসঙ্গে গেলে দম্পতির মধ্যে খুব গভীর মানসিক আকর্ষণ তৈরি হয়। তাঁরা নিজেদের ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে আরম্ভ করেন এবং একে অপরের সঙ্গে তা আলোচনায় উৎসাহী হয়ে ওঠেন, বলছেন মনোবিদরা।
মাইলফলক : নির্দ্বিধায় ঢেকুর তোলা
পরিস্থিতি : আপনারা পরস্পরকে নিয়ে খুব স্বচ্ছন্দ
‘‘আমি কোনওদিন ভাবিইনি যে কারও সামনে ঢেকুর তোলা, দাঁত মাজা বা ওয়্যাক্স না করা আন্ডারআর্ম নিয়ে সাঙ্ঘাতিক সচেতন হতে হয়! কিন্তু আমার বয়ফ্রেন্ড সঞ্জীবের সঙ্গে প্রথম আলাপ হওয়ার পর ঠিক সেটাই হত। ওর সামনে শব্দ করে ঢেকুর তোলার মতো সামান্য প্রাকৃতিক ব্যাপারস্যাপারগুলো নিয়েও মাত্রাতিরিক্ত সচেতন থাকতে হত, না হলেই সঞ্জীবও সেটা নিয়ে আমার বন্ধুদের সামনেই হাসিঠাট্টা করত। একটা সময় আমার নিজেরও অস্বস্তি হতে আরম্ভ করল এবং আমি বুঝতে পারলাম, যদি কাউকে সত্যি ভালোবাসি, তা হলে এই ধরনের ব্যাপারগুলো নিয়ে বেশি চিন্তাভাবনা করাই উচিত নয়। শেষমেশ আমাদের সম্পর্কটা টেকেনি, এবং সেটা নিয়ে মনে দুঃখও নেই,’’ বলছেন সেলস ম্যানেজার শিল্পী সেন (নাম পরিবর্তিত)। মনোবিদেরা বলেন, এই সমস্ত ছোটখাটো বিষয় থেকে বোঝা যায়, আপনার পার্টনার আসলে আপনাকে ভিতর থেকে ভালোবাসেন, নাকি স্রেফ সময় কাটান!
মাইলফলক : প্রথমবার ট্র্যাজেডির মুখোমুখি দাঁড়ানো
পরিস্থিতি : সারাজীবনের সঙ্গী
খুব কাছের কেউ মারা গিয়েছেন অথবা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সাঙ্ঘাতিক আহত হয়েছেন এমন কেউ যাঁকে আপনি খুব ভালোবাসেন। তাই মনমেজাজ ভালো নেই, খুব দৌড়োদৌড়ি করতে হচ্ছে কয়েকদিন ধরে… এই পরিস্থিতিতে আপনার সঙ্গী কীভাবে পাশে দাঁড়াচ্ছেন, তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। আপনি পরিষ্কার বুঝতে পারবেন যে আপনার প্রতি ওঁর মানসিক দায়বদ্ধতা বলে আদৌ কিছু আছে কিনা। গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে, যে সব দম্পতি একসঙ্গে মাথা ঠান্ডা রেখে পরিবারে ঘটে যাওয়া কোনও ট্র্যাজিক ঘটনার অভিঘাত সামলাতে পারেন না, তাঁরা সাধারণত পরবর্তীকালে পরস্পরের থেকে আলাদা হয়ে যান। দম্পতির মধ্যে কোনও একজন যখন মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন, তখন যদি অপরজন তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে মনের জোর বাড়াতে না পারেন, তা হলে আর সম্পর্ক রাখা কেন?
মাইলফলক : যৌনতাই সব নয়
পরিস্থিতি : যে রাতে প্রথমবার যৌন সম্পর্ক হল না
ধরুন আপনাদের মধ্যেকার সম্পর্ক খুব ভালো, যৌন সম্পর্কের তো কথাই নেই! কিন্তু তা সত্ত্বেও এক-আধদিন এমন যাবেই যেদিন কোনও কারণে হয়তো যৌনতা সেই অর্থে সাড়া জাগাবে না শরীরে। প্রথমদিকে যৌনতার যে তীব্রতা থাকে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা ক্রমশ কমে যায় এবং সম্পর্কের এই পর্যায়টাও একান্ত জরুরি। কারণ এই পরিস্থিতিতেই এক দম্পতি বুঝতে পারেন যে সম্পর্কে যৌনতা ছাড়াও আরও অনেক কিছু থাকে এবং তাতে এক-আধদিন ছেদ পড়লে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে না। যত তাড়াতাড়ি এটা বুঝবেন তত ভালো।
মাইলফলক : প্রথম তুমুল ঝগড়া
পরিস্থিতি : দু’জনের বন্ডিং এমন হওয়া উচিত যাতে যে কোনও ধাক্কা সামাল দেওয়া যায়
যে সব দম্পতির মধ্যে ঝগড়া হয় না মোটেই, তাঁদের সম্পর্ক কতটা গভীর, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। ছোটখাটো ঝগড়া সবারই হয়, খুব তাড়াতাড়ি তা থেকে বেরিয়ে আসাও সম্ভব। কিন্তু বড়োসড়ো ঝগড়া, যেখানে দাঁড়িয়ে সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার কথাও চিন্তা করতে আরম্ভ করেছেন আপনারা, এমন কি কখনও হয়েছে? এই ধরনের ঝামেলার পর যখন দুটো মানুষ পরস্পরের কাছে আবার ফিরে আসেন, তখন বোঝা যায় তাঁরা সম্পর্কটা এগিয়ে নিয়ে যেতে চান।
সূত্র : ফেমিনা, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮