আজিজুল হক বিপুল, মহাস্থান (বগুড়া) প্রতিনিধি ।।
বগুড়া সদর উপজেলার লাহিরীপাড়া ইউনিয়নে, করতোয়া নদী থেকে একটি শাখা বাহির হয়ে দিঘলকান্দি, বুজরুক মাঝিড়া, রোকনগারি, লাহিরীপাড়া হয়ে ফুলের মালার মতো গোলাকার হয়ে পার-মহাস্থান এসে আবারো করতোয়া নদীতে যোগ হয়েছে। এই শাখা নদীটি খুব গভীর হওয়ায়, নাম হয়েছে “ফুলমালা দও”। এই “ফুলমালা দও”-এ এক সময় প্রচুর মাছ পাওয়া যেত।
বছরে কয়েকবার ঢোল শহরত (শুমার) দিয়ে বউত (এক সঙ্গে সারিবদ্ধভাবে অনেক লোক মাছ ধরতো) নামতো। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন পলি, ছাপিজাল, জাকই, জাল নিয়ে এসে একসাথে সারিবদ্ধভাবে মাছ ধরত। এই “ফুলমালা দও”-এর পানি দিয়ে আশেপাশের মাঠগুলিতে সেচকার্য চালাত। বোরো মৌসুমে, আইআরডিবি (বর্তমানে বিআরডিবি) থেকে ৪/৫টি পাওয়ার পাম্প ভাড়া নিয়ে দিঘলকান্দি, বুজরুকমাঝিড়া, মধুমাঝিড়া, ধাওয়াকান্দি, লাহিরীপাড়া, গৌরিদাসপুর সহ আশেপাশের মাঠগুলিতে বোরো চাষে সেচকার্য চালাত।
“ফুলমালা দও”কে কেন্দ্র করে এখানে একটি জেলেপাড়া গড়ে উঠে। এই জেলেপাড়ার লোকজন সারাবছর এই দও থেকে মাছ ধরে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করত। দিন দিন দওটি ভরাট হয়ে যাওয়ায়, সারা বছর পানি না থাকায় এই শাখা নদীতে এখন ধান চাষ হয়। যে যেভাবে সুযোগ পেয়েছে, সে সেইভাবে দখল করে ধানচাষ করছে। বোরো মৌসুমে মনে হয় এটা ফসলী জমির মাঠ।
জেলেপাড়ার কয়েকজন জেলে মাছ ধরার জায়গা না থাকায় তারা মাছ ব্যবসায়ী হয়েছেন। মহাস্থানহাট সহ বিভিন্ন হাটে মাছের আড়ৎ দিয়ে ব্যবসা করছেন। বাকীরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সচেতন এলাকাবাসী জানান, এই খালটি খনন করে, মাছ চাষের ব্যবস্থা করলে, জেলেপাড়ার অসহায় জেলেরা এখান থেকে মাছ চাষ করে সুখে জীবন যাপন করতে পারত। সরকার পেত প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব। এলাকার কৃষক পেত সেচ সুবিধা।