আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় ব্যবহার করে চাকরি করায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সাবেক সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা এইচ এম গোলাম কিবরিয়ার চাকরি জীবনের সব বেতনাদি ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১৮ জুন ভূমি, রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর থেকে তদন্তের পর গোলাম কিবরিয়ার চাকরি জীবনের সব বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর সেই নোটিসের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন গোলাম কিবরিয়া। বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) সেই রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি খারিজ করে দেন এবং নোটিশের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন। এর ফলে অবৈধভাবে মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে চাকরি করে অবসরে যাওয়া ওই কর্মকর্তাকে তার চাকরির সব বেতন-ভাতাদি ভূমি অধিদফতরের জমা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এরপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ বি এম বায়েজিদ। এসময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। অন্যদিকে আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শামীম হোসেন।
জানা যায়, এর আগে গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী সেজে সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা পদে চাকরি গ্রহণের অভিযোগ ওঠে। তবে ততদিনে এই কর্মকর্তা চাকরি থেকে অবসরে (পিআরএল) যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের বিষয়ে জবাব চেয়ে ২০১৭ সালের ১ মে ভূমি, রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের মহাপরিচালক একটি নোটিশ দেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় বিষয়টি তদন্ত করে। সে তদন্তে দেখা যায়, গোলাম কিবরিয়া ১৯৭১ সালে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়োগের সময় যা উল্লেখ করা হয়, তা মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার ৮ থেকে ১০ বছর পর অর্জিত হয়েছে।
তাই তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৮ জুন ভূমি, রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর থেকে আরেকটি নোটিশের মাধ্যমে এ এইচ এম গোলাম কিবরিয়াকে তার চাকরি জীবনের শুরু (১৯৮৫ সালের ২৫ নভেম্বর) থেকে শেষ পর্যন্ত সকল বেতন- ভাতাদি সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়।
কিন্তু অধিদফতরের সে নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গোলাম কিবরিয়া হাইকোর্টে রিট দায়ের করলে ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট হাইকোর্ট নোটিশটির কার্যক্রম স্থগিত করেন এবং এর বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করেন। তবে বৃহস্পতিবার সে রিট খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
এ ব্যাপারে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরে আর কোন বাধা থাকবে না এবং চাকরি থেকে প্রাপ্ত সব বেতন-ভাতাদি সরকারি কোষাগারে তাকে জমা দিতে হবে।’
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন, ২৫ অক্টোবর ২০১৮