আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিল ২০১৮ শনিবার জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। রাষ্ট্রপতির সইয়ের পর বিলটি আইনে পরিণত হবে।
এই আইনের ৯ ধারায় বলা আছে, অ্যালকোহল ব্যতীত অন্যান্য মাদকদ্রব্যের উৎপাদন বা প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহার হয় এমন কোনো দ্রব্য বা উদ্ভিদের চাষাবাদ, উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বহন বা পরিবহন ও আমদানি-রপ্তানি করা যাবে না।
আরও বলা হয়েছে এ জাতীয় মাদক সরবরাহ, বিপণন, কেনা-বেচা, হস্তান্তর, গ্রহণ-প্রেরণ, লেনদেন, সংরক্ষণ, গুদামজাতকরণ ও প্রদর্শন করা যাবে না। সেবন অথবা ব্যবহারও করা যাবে না।
আইনের ৯ ধারা লঙ্ঘনে কী ধরনের সাজার বিধান রয়েছে সে সম্পর্কে আইনের ৩৬ ধারায় বিশদ বলা হয়েছে। এই ধারায় বলা আছে, কোথাও পপি ফল বা পপির অঙ্কুরোদ্গম বীজ পাওয়া গেলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে কোথাও ১০টি বা তার কম পপি গাছ অথবা এই গাছের ফল বা বীজ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। গাছের সংখ্যা ১১ থেকে ১০০ এর মধ্যে হলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড এবং গাছের সংখ্যা ১০০ এর বেশি হলে কমপক্ষে ১০ বছর ও সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া যাবে।
কোথাও ১০টি বা তার কম কোক গাছ বা কোক গুল্ম পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এক থেকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। গাছের সংখ্যা ১১ থেকে ১০০ এর মধ্যে হলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড এবং গাছের সংখ্যা ১০০ এর বেশি হলে ১০ থেকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া যাবে।
আফিম বা আফিম দ্বারা তৈরি নেশাদ্রব্য ১০০ গ্রাম বা তার বেশি হলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। একই নেশাদ্রব্যের পরিমাণ ১০০ থেকে ১ হাজার গ্রামের মধ্যে হলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড এবং ১ হাজার গ্রামের বেশি হলে ১০ থেকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে।
৫ গ্রাম পর্যন্ত কোকেন, হেরোইন, মরফিন ও পেথিডিন পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। এই মাদকের পরিমাণ ৫ থেকে ২৫ গ্রামের মধ্য হলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড এবং মাদকের পরিমাণ ২৫ গ্রাম বা তার বেশি হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে।
ইয়াবা বা অ্যামফিটামিনের উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বহন বা পরিবহন ও আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে—১০০ গ্রাম পর্যন্ত ইয়াবা পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। ইয়াবার পরিমাণ ১০০ থেকে ২০০ গ্রামের মধ্যে হলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। ইয়াবার পরিমাণ ২০০ গ্রাম বা তার বেশি হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে।
ইয়াবা সরবরাহ, বিপণন, কেনা-বেচা, হস্তান্তর, গ্রহণ-প্রেরণ, লেনদেন, সংরক্ষণ, গুদামজাতকরণ ও প্রদর্শনের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে—২০০ গ্রাম পর্যন্ত ইয়াবা পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। ইয়াবার পরিমাণ ২০০ থেকে ৪০০ গ্রামের মধ্যে হলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। ইয়াবার পরিমাণ ৪০০ গ্রাম বা তার বেশি হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে।
ইয়াবা সেবনের শাস্তি ৩ মাস থেকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।
কোথাও ৫০টি বা তার কম গাঁজা বা ভাং গাছ পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। গাছের সংখ্যা ৫০ থেকে ৫০০ টির মধ্যে হলে ৫ থেকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড এবং গাছের সংখ্যা ৫০০ টির বেশি হলে ৭ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে।
গাঁজা বা ভাং গাছের শাখা-প্রশাখা, পাতা, ফুল ইত্যাদির দ্বারা তৈরি মাদকের পরিমাণ ৫ কেজি বা তার কম হলে ৬ মাস থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড, মাদকের পরিমাণ ৫ কেজি থেকে ১৫ কেজির মধ্যে হলে ৫ থেকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড এবং মাদকের পরিমাণ ১৫ কেজির বেশি হলে ৭ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে।
সূত্র : প্রথম আলো, ২৮ অক্টোবর ২০১৮