আবদুল্লাহ আল মহসিন ।।
কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ ও দেশী প্রজাতির গরু কমে যাওয়ায় হাল-চাষে এখন কৃষক শ্রমিকের কাঁধেই উঠেছে লাঙ্গল জোয়াল। আবহমান বাংলার ঐতিহ্য হালের গরু আর লাঙ্গল জোয়াল হারিয়ে যাওয়ার পথে। এক সময় হাওরের কৃষি জমি হাল চাষের জন্য গরুই ছিল একমাত্র মাধ্যম। কালের আবর্তে কৃষকের ঘর থেকে গোয়ালভরা দেশী গরু হারিয়ে এখন বিদেশী ও শংকরজাত গরু বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন ও লালন হচ্ছে। এসব মোটাসোটা গরু হাল চাষে একেবারেই অনুপযুক্ত হওয়ায় পাওয়ার টিলার দিয়েই চলে হাল চাষের কাজ। তবে সবচেয়ে সমস্যা হয় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের। তারা সামর্থের অভাবে নিরুপায় হয়ে হাল চাষে নিজের কাঁধেই লাঙ্গল জোয়াল তুলে নেন।
নিকলী উপজেলার বিস্তীর্ণ হাওর জুড়ে এখন চলছে কৃষি জমি তৈরির কাজ। বর্ষার পানি শুকিয়ে পলি পড়েছে। সে জমিতে আইল বাধা, সেচ দেয়া, বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত রয়েছেন কৃষক। কোথাও চলছে বীজ বপনের কাজ। আবার কোথাও চলছে হাল বাওয়া। দিগন্ত বিস্তৃত হাওরে একবারই ফসল ফলানো যায়। উপজেলার বড় হাওরে গিয়ে দেখা যায় ৩ কৃষক হাল চাষ করছেন। গরুর পরিবর্তে নিজেদের কাঁধেই বহন করছেন লাঙ্গল জোয়াল। তাদের একজন আঃ রহিম। বয়স ২৮। তিনি জানান, দেশে হালের গরু পাওয়া যায় না। আর পাওয়ার টিলার কেনার সামর্থও নেই। তাই বাধ্য হয়ে নিজের কাঁধেই লাঙ্গল বহন করে হাল চাষ করছি। একই অবস্থা দেখা যায় জোয়ানশাহী হাওরসহ উপজেলার প্রায় সব হাওরের বেশ কিছু জমিতে।