আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
পাকিস্তানে স্পর্শকাতর তথ্য ও ছবি পাচারের অভিযোগে গুপ্তচর সন্দেহে গ্রেপ্তার বিএসএফ জওয়ান। পুলিশের দাবি, তথ্য প্রমাণ সমেত ধরা হয়েছে ওই জওয়ানকে। দেশের গোপন ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাক চরদের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগে পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই বিএসএফ জওয়ানকে। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দু’টি মোবাইল ফোন ও সাতটি সিম কার্ড। গ্রেপ্তার হওয়া জওয়ানের নাম শেখ রিয়াজুদ্দিন ওরফে রিয়াজ। তাঁর বাড়ি মহারাষ্ট্রের লাতুর জেলায়।
ভারত-পাক সীমান্তের শহর পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে বিএসএফ ক্যাম্পে কাজ করছিলেন রিয়াজ। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এপারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ওপারে পাঠিয়ে দিত সে। ওপার থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখত পাক চর মির্জা ফয়জল। এপারের বিভিন্ন রাস্তা ও কাঁটাতারের ছবি, ফিরোজপুরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সেনা অফিসারদের ফোন নম্বর সহ আরও নানা তথ্য সে নিয়মিত পাঠিয়ে দিত ফয়জলকে।
গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হওয়ায়, তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম এই অভিযোগ আনেন বিএসএফের ২৯ নম্বর ব্যাটালিয়নের ডেপুটি কমান্ডার। এর পরই রিয়াজকে গ্রেপ্তার করে পাঞ্জাব পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে দেশের গোপন তথ্য ফাঁস করার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে পুলিশের তরফে। এই মুহূর্তে রিয়াজকে জেরা করছে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ফেসবুক মেসেঞ্জার-সহ তাঁর বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট।
পাঞ্জাবকে অশান্ত করতে সক্রিয় হয়ে উঠছে বিদেশি অশুভ শক্তি, গত কালই দেশকে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত। তার পরই গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে এই গ্রেপ্তারির ঘটনা সেনাপ্রধানের হুঁশিয়ারিতে অন্য মাত্রা যোগ করেছে।
সেনাপ্রধান বলেছেন, “পাঞ্জাবে আমাদের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে ভাবলে খুব ভুল হয়ে যাবে। যা হচ্ছে, তাতে চোখ বন্ধ করে থাকলে চলবে না। আমাদের খুব সতর্ক থাকতে হবে। প্রতিবেশী দেশ পাঞ্জাবে খলিস্তানি আন্দোলন ও বিচ্ছিন্নতাবাদকে ফের জাগিয়ে তোলার মরিয়া চেষ্টা শুরু করেছে।” দেশের গুরুত্বপূর্ণ সেনা আধিকারিক, প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ এবং প্রাক্তন সরকারি আমলাদের উপস্থিতিতে একটি আলোচনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন বিপিন রাওয়াত।
পাঞ্জাবের পাশাপাশি অসমেও অস্থিরতা তৈরির চক্রান্ত চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর সুরে সুর মিলিয়ে আশঙ্কার কথা জানান উত্তরপ্রদেশ পুলিশের প্রাক্তন ডিজিপি প্রকাশ সিংহ। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ব্রিটেনে গণতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতার সুযোগ নিয়ে খলিস্তানপন্থীরা নিয়মিত মিটিং মিছিল করছে। ওদের কাজকর্মের পিছনে পাকিস্তানের সক্রিয় মদত রয়েছে।
১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের ঠিক আগে এই মিছিলে বিচ্ছিন্নতাবাদী স্লোগানও দেয় খলিস্তানপন্থীরা। ‘রেফারেন্ডাম ২০২০’, অর্থাৎ ২০২০ সালের মধ্যে পাঞ্জাবকে স্বাধীন করার ডাক দিয়েছে ‘শিখ্স ফর জাস্টিস’ নামের একটি গোষ্ঠী। এই ঘটনায় বিপদের সম্ভাবনা দেখছেন সেনা কর্তারা। সেনাপ্রধানের পরামর্শ, সেনার পাশাপাশি সরকার, প্রশাসন, পুলিশ এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা একযোগে কাজ করলে তবেই এই অশুভ শক্তির মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
সূত্র : সংবাদপ্রতিদিন (ভারত), ৫ নভেম্বর ২০১৮