আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
জার্মানিতে পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা ভয়ংকর মাত্রায় বেড়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবারমন্ত্রী। প্রতি তিনদিনে নিজের সঙ্গী বা পুরোনো সঙ্গীর দ্বারা অন্তত একজন নারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
জার্মানিতে নারীবিষয়ক মন্ত্রী ফ্রান্সিসকা গিফে মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর ২০১৮) ২০১৭ সালের পারিবারিক সহিংসতার পরিসংখ্যান তুলে ধরে তা নিরসনে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। গত তিন বছরে জার্মানিতে পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে ১০ ভাগ। তবে এগুলো কেবল তাদের ঘটনা, যারা এ সম্পর্কে থানায় রিপোর্ট করেছেন। বাস্তবিক সংখ্যাটা আরও বেশি বলে আশংকা করছেন মন্ত্রী।
২০১৭ সালে ১ লাখ ৪০ হাজার নারী-পুরুষ তাদের সঙ্গীদের দ্বারা সহিংসতার শিকার হয়েছেন বলে রিপোর্ট করেছেন। গড়ে প্রতিদিন অন্তত একজন তার প্রেমিক, স্বামী, প্রেমিকা বা স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করেছেন। এদের ১৪৭ জনের ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গীরা সফল হয়েছেন, অর্থাৎ তাদের হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া ধর্ষণ, শারীরিক নির্যাতন, শ্বাসরুদ্ধ করা এবং যৌন হয়রানির অসংখ্য রিপোর্ট রয়েছে। এদের মধ্যে ৮২ শতাংশ মামলায় নারীরা সহিংসতার শিকার হয়েছেন। আর গত বছর নারীদের হাতে খুন হয়েছেন ৩২ জন প্রেমিক বা স্বামী। এদের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশই জার্মান নাগরিক।
ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-এর চেয়ারম্যান ভল্ফগাং স্টাডলের বলেছেন, তিনি এই পরিসংখ্যান দেখে আতঙ্কিত এবং এ সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছেন, যাতে সবাই এ ব্যাপারে সহযোগিতা করে।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সহিংসতা চালানো পুরুষদের বেশিরভাগই জার্মান এবং তারা সব শ্রেণি-পেশার। ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সের পুরুষরা বেশি সহিংস। মদ্যপানও একটি ‘ফ্যাক্টর’ হিসেবে কাজ করেছে অনেকক্ষেত্রে।
জার্মানিতে পারিবারিক সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার নারীদের জন্য ‘নারী আশ্রয়কেন্দ্র’ রয়েছে ৩৫০টি, আছে ৬০০টি বিশেষ পরামর্শ কেন্দ্র, যারা প্রতিবছর ৩০ হাজার নারীকে সহায়তা দিয়ে থাকেন। এছাড়া ১৭টি ভাষায় ২৪ ঘণ্টা ফোনে সহায়তা দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
নতুন পরিসংখ্যান প্রকাশের পর নারীবিষয়ক মন্ত্রী গিফে এ খাতে অর্থ সহযোগিতা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া নতুন এক ধরনের ফোন লাইন সুবিধা চালু করার কথা জানিয়েছেন তিনি। ২০২০ সাল নাগাদ নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা নির্মূলে প্রচারণা চালাতে সাড়ে তিন কোটি ইউরো ব্যয় করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সূত্র : ডয়চে ভেলে, ২২ নভেম্বর ২০১৮