মিষ্টি কুমড়ার অবাক করা গুণাগুণ

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
সুস্বাদু মিষ্টি কুমড়া অনেকেরই খুব প্রিয়। এ সবজি দেহের নানারকমের পুষ্টির যোগান দিয়ে থাকে। এতে ভিটামিন-এ, বি-কমপ্লেক্স, সি, ই, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, জিংক, ফ্লেভনয়েড পলি-ফেনলিক, অ্যান্টিঅক্সিডেণ্ট উপাদান সমূহ যেমন লিউটিন, জ্যানথিন এবং আরো অনেক উপাদান রয়েছে। কুমড়া ক্যালোরিও বেশ কম থাকে।

কিন্তু অনেকের জানা নেই, এসব ছাড়াও কুমড়ার এমন কিছু গুণাগুণ আছে যা অবাক করার মতো। জেনে নিন কুমড়োর অবিশ্বাস্য স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে।

চোখের জন্য
কুমড়ার ভিটামিন-এ উপাদান চোখের জন্য খুবই ভালো। বিশেষ করে যারা কম বা অস্পষ্ট আলোর মধ্যে থাকে, তাদের কুমড়ার ভিটামিন-এ চোখকে কর্নিয়া থেকে রক্ষা করে থাকে। এটি মানবদেহের সুস্থ ত্বক গঠনে সাহায্য করে থাকে ও দেহে টিস্যু তৈরি করতে সহায়তা করে থাকে। এ সবজিতে ক্যারটিনয়েড নামক উপাদান আছে, যা চোখে ছানি পড়া ও যেকোনো বয়সে চোখের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে থাকে। তাই দেরি না করে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মিষ্টি কুমড়া রাখাটা খুব দরকার।

দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
কুমড়া হলো বিভিন্ন ধরণের ভিটামিনের ভাণ্ডার। এতে আছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন-এ, সি, ই, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং আরও অনেক উপাদান। বিশেষ করে ভিটামিন এ মানদেহের টিস্যুর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। যা টিস্যুকে রক্ষা করে থাকে। কুমড়ার বিশেষ উপাদান বিটা-ক্যারোটিন মানবদেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে
কুমড়াতে ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম। কিন্তু এতে প্রচুর পরিমানে ফাইবার ও পটাশিয়াম আছে। কুমড়ার ফাইবার দেহের ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। পটাশিয়াম দেহ থেকে অপ্রয়োজনীয় পানি ও লবণ বের করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তাই চাইলে প্রতিদিন কুমড়ো জুস করে খাওয়া যেতে পারে।

দেহের জ্বালাপোড়া সমস্যা দূর করে
কুমড়ার ক্যারটিনয়েড এর জন্য রঙ উজ্জ্বল কমলা হয়ে থাকে এবং এটি দেহের জ্বালাপোড়া সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। এই সবজির বিটা-ক্যারোটিন উপাদান মানবদেহের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। আলফা-ক্যারোটিন উপাদান দেহে টিউমার হওয়া থেকে রক্ষা করে। কুমড়ার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন-ই মানবদেহকে ক্যান্সার ও আলঝেইমার রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
পুষ্টি ও ফাইবারে ভরপুর কুমড়া খেলে দেহের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। কুমড়া দেহের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ডায়রিয়া সমস্যায় দূর করতে সাহায্য করে এবং কাঁচা কুমড়োর রস মানবদেহের অ্যাসিডিটি সমস্যা রোধ করে। তাই সবসময় সুস্থ থাকতে চাইলে এক গ্লাস কুমড়ার জুসের সাথে সামান্য মধু মিশিয়ে তিন বেলা খেতে পারেন। কিন্তু এই জুস যেকোনো ভারী খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে খেতে হবে।

ত্বকের সুরক্ষায়
কুমড়ার আসল উপাদান ভিটামিন-এ ও বিটা ক্যারোটিন ত্বক খুব ভালো রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন-এ ত্বককে সুরক্ষা করে ও বিটা-ক্যারোটিন, সূর্যের তাপে ত্বকের যে সমস্যা হয়ে থাকে তা রোধ করে। ভিটামিন-বি ও সি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ও স্বাস্থ্যবান চামড়া তৈরিতে সহায়তা করে। ভিটামিন বি-৫ ত্বকের যেকোনো দাগ দূর করতে সাহায্য করে।

ব্যায়াম করার পর দেহে কুমড়ার উপকারিতা
ব্যায়াম করার পর খাদ্য হিসেবে কুমড়া খাওয়া যেতে পারে। তার সাথে মিষ্টি আলুও খাওয়া যেতে পারে। এই খাবার মানবদেহে প্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেট এর যোগান দিয়ে থাকে। কুমড়া মানবদেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে তো রাখেই, পাশাপাশি দেহের সুস্থ পেশি তৈরিতেও সাহায্য করে। যারা সাধারণত অ্যাথলেটিক ট্রেনিং নিয়ে থাকেন, তাদের জন্য কুমড়ো বেশি করে খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি।

গর্ভবতীদের জন্য
গর্ভাবস্থায় মিষ্টি কুমড়া খাওয়া উচিত। কারণ এটি দেহে অনেক বেশি শক্তি যোগায় ও গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যের জন্য কুমড়া অনেক উপকারী খাদ্য। এটি পাশাপাশি হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ও কুমড়ার আয়রন বাচ্চাকে অক্সিজেন দিতে সাহায্য করে ও মায়ের রক্তশূন্যতা রোধ করে।

উচ্চ রক্তচাপ কমায়
কুমড়াতে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম উপাদান আছে, যা মানবশরীরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন-সি ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে থাকে। তাছাড়া কুমড়োর বিভিন্ন উপাদান দেহের কিডনি, লিভার, হার্টকে সুস্থ রাখে। কুমড়োর ফাইবার দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রেখে দেহকে স্ট্রোক করার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে।

সংগৃহীত

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!