শিশুদের চোখের সমস্যায় করণীয়

ছোট শিশুদের স্কুলের ব্ল্যাকবোর্ডের অক্ষর ঝাপসা দেখা বা নিজের খাতায় লিখতে অসুবিধা হচ্ছে – এমনটা লক্ষ্য করলে অবশ্যই ডাক্তার দেখানো উচিত৷ শিশু বয়সে চোখের গোলমাল ধরা পড়লে কিন্তু সমাধান সম্ভব, জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷

স্কুলে সমস্যা
শিশুদের চোখের সমস্যা থাকলে তা অবশ্যই স্কুলের লেখাপড়া বা পরীক্ষার ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যা খুবই স্বাভাবিক৷ দূরে দেখার সমস্যা হলে শিশুরা ব্ল্যাকবোর্ডের লেখা ভালোভাবে দেখতে পারে না আর কাছে দেখার অসুবিধা হলে পড়তে এবং নিজের খাতায় লিখতে সমস্যা হয়৷ আর এ সব অসুবিধার কারণ শিশুরা নিজেরা বোঝে না বা কাউকে ঠিকমতো বোঝাতেও পারে না৷

চোখ পরীক্ষা জরুরি
শিশু বয়সে চোখ পরীক্ষা খুবই জরুরি৷ কারণ চোখে যদি কোনো ত্রুটি, গোলমাল বা দেখার কোনো অসুবিধা থেকে থাকে, তা ছোট অবস্থায় ধরা পড়লে সহজেই তার চিকিৎসা সম্ভব৷ ডাক্তাররা বলেন, ছয় বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের দৃষ্টিশক্তির সমস্যা ঠিক করা সম্ভব৷ কিন্তু শিশুদের বয়স ১০ হওয়ার পর ওদের চোখে কোনো ‘ডিফেক্ট’ থাকলে তা ঠিক করা সম্ভব নয় বা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়৷

সমস্যা কীভাবে বুঝবেন?
শিশুরা ওদের সমস্যা বুঝতে পারে না৷ তাই মা-বাবাকেই খেয়াল রাখতে হবে৷ শিশুর একটি চোখ বন্ধ করে তাকে কিছু একটা দেখতে দিন৷ এরপর অন্য চোখটিও একই উপায়ে পরীক্ষা করুন৷ দেখুন, শিশু আলাদাভাবে দুই চোখেই সমান পরিষ্কার দেখতে পায় কিনা৷ এছাড়াও লক্ষ্য রাখুন, লেখার সময় লাইনগুলো সোজা কিংবা ওপর-নীচ হচ্ছে কিনা৷

ঘরোয়া পরীক্ষা পর
ঘরোয়া পরীক্ষা শেষ হলে এবং কোনো সন্দেহ থাকলে শিশুকে নিয়ে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে৷ প্রয়োজনে চশমা বা ওষুধ দেবেন ডাক্তার সাহেব৷

বিশেষ চশমা
অনেক শিশু আছে, যারা নিয়মিত চশমা পরে৷ কিন্তু তারাই আবার খেলাধুলার সময় চশমা খুলে রাখে, যা মোটেই ঠিক নয়৷ শিশুদের খেলাধুলা করার জন্য বিশেষভাবে তৈরি আলাদা চশমা পাওয়া যায়৷ তাই খেলার সময় সেই চশমা পরা উচিত৷ তা না হলে যে কোনো রকম অঘটন ঘটতে পারে৷

বড় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যা লক্ষ্যণীয়
মাঝে মাঝেই চোখ কচলানো, কপাল কুচকে কিছু দেখা, লেখা বা ছবি আঁকার সময় তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হওয়া, পড়া বা লেখার সময় গতি খুব কম থাকা, ভুল পড়া বা লেখা এবং টিভি দেখার সময় বেশি কাছে গিয়ে দেখা৷ এ বিষয়গুলো মা-বাবার নজরে পড়লে অবশ্যই চোখের ডাক্তার দেখাতে হবে৷

আরো কিছু লক্ষণ
হঠাৎ করে স্কুলের পরীক্ষার ফল খারাপ করা, মাঝে মাঝে ঘরের আসবাব-পত্রে হোঁচট খাওয়া, অন্ধকারে বাইরে যেতে না চাওয়া, বন্ধুদের কাছ থেকে একটু দূরে থাকা ইত্যাদি লক্ষণ দেখলে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যাওয়াই শ্রেয়৷ এই পরামর্শগুলো দিয়েছেন জার্মান চক্ষু বিশেষজ্ঞ টোমাস ট্রুকেনব্রোড৷

সংগৃহীত

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!