সা’দপন্থীদের বর্বরতা ও সহিংসতা একটি কালো অধ্যায় : শাহ আহমদ শফী

মাহমুদ আল আজাদ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি ।।

বাংলাদেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরাম এবং তাবলিগ জামাতের মুরব্বীদের সমন্বয়ে শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে তাবলিগ জামাতের চলমান সংকট নিরসন ও আমাদের করণীয় শীর্ষক উলামা-মাশায়েখ প্রতিনিধি সম্মেলন আজ ১০ ডিসেম্বর (সোমবার) সকাল ১১টায় দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার দারুল হাদীছ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বক্তাগণ বলেন, গত পহেলা ডিসেম্বর টঙ্গী ময়দানে সা’দ সাহেব ও ওয়াসিফগংদের অনুসারীরা যে অমানবিক ও নৃশংস হামলা করেছে এর নিন্দা করার ভাষা আমাদের জানা নেই। এই হামলায় তাবলিগের সাথী ও মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক মিলে প্রায় পাঁচ হাজারের মতো আহত হয়েছেন। এর মধ্যে শতাধিক অত্যন্ত গুরুতর হামলার শিকার হয়ে মূমুর্ষ অবস্থায় আছেন।

বক্তারা আরো বলেন, টঙ্গী ময়দানে হামলার সময় পুলিশের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। বিজ্ঞ মহল এটাকে একটি সুপরিকল্পিত হামলা বলে মনে করছেন। সেদিন সা’দপন্থীরা যে বর্বরতা ও সহিংসতা দেখিয়েছে এটা তাবলিগের ইতিহাসে একটি কালো দিন হিসেবে লেখা থাকবে‎। ঘটনার পরিকল্পনাকারী ও এর সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার বিভাগীয় তদন্তসাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানানো হয়েছে।
সভায় নিম্ন লিখিত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহিত হয়।

১. পহেলা ডিসেম্বর শনিবার টঙ্গী ময়দানে সংঘটিত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত জনাব ওয়াসিফুল ইসলাম, খান শাহাবুদ্দিন নাসিম, মাওলানা মোশাররফ হোসাইন ও ইউনুস সিকদার এবং তাদের অনুসারীদেরকে কাকরাইল মসজিদে ঢুকতে না দেয়ার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২. সরকারের সাথে পরামর্শকৃত বিশ্ব ইজতেমার নির্ধারিত তারিখ ১৮, ১৯ ও ২০ জানুয়ারি ২০১৯ (প্রথম পর্ব) এবং ২৫, ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি (দ্বিতীয় পর্ব) এখনি চূড়ান্ত করে ইজতেমার জন্যে ময়দান তৈরি করার সুযোগ দিতে হবে।
৩. জনাব সা’দ এবং তাঁর বাংলাদেশি অনুসারী এতাআতী দলের বিষয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল উলামায়ে কেরামের ঐক্যবদ্ধ ফাতাওয়া তৈরি করে ব্যাপকভাবে প্রচার করা।
৪. দাওয়াত ও তাবলিগে সৃষ্ট সঙ্কটের ওজাহাত এবং টঙ্গী ময়দানের ঘটনার বিবরণ ও বাস্তবচিত্র তুলে ধরা অব্যাহত রাখা।
৫. প্রত্যেক এলাকায় উলামায়ে কেরাম ও তাবলিগের সাথীরা সমন্বিতভাবে বেশির থেকে বেশি জামাত বের করার ফিকির করা এবং নামায ও দু’আর ইহতেমাম করা।
৬. সা’দপন্থীরা নিজেদেরকে এতাআতী হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। সুতরাং যার এতাআতে থেকে টঙ্গী ময়দানে বর্বর হামলা চালিয়েছে- তা উদঘাটন করতঃ তাকে বিচারের আওতায় আনা।
৭. আগামী সাতদিনের মধ্যে সরকারের কাছে পেশ করা দাবিসমূহ পূরণ না হলে পরবর্তীতে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

বৈঠকে যারা উপস্থিত ছিলেন : মাওলানা আশরাফ আলী, মাওলানা মুহাম্মদ জোবাইর, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী, মাওলানা শেখ আহমদ, মুফতি রুহুল আমিন, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মাওলানা মাহমুদুল আলম, মাওলানা আব্দুল বাছির, মাওলানা মুবারক উল্লাহ, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা নুরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপুর), মাওলানা নুরুল হুদা ফয়জী, মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ ফরিদী, মাওলানা উমর ফারুক, মুফতি জসিমুদ্দীন, মুফতি কেফায়াতুল্লাহ, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা জোবাইর আহমদ চৌধুরী ও মুফতি নুরুল আমিন প্রমুখ।

শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর কান্নাবিজড়িত দু’আর মাধ্যমে সভার সমাপ্তি হয়।

Similar Posts

error: Content is protected !!