ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি ।।
নওগাঁর ধামইরহাটে ১০ বছর পর আবারও মুখোমুখি লড়াইয়ে নেমেছেন ক্ষমতাসীন দলের হেভিওয়েট প্রার্থী হুইপ শহীদুজ্জামান সরকার (নৌকা) ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি সামসুজ্জোহা খান (ধানের শীষ)।
ধামইরহাট-পত্নীতলা উপজেলা দু’টি সংসদীয় ৪৭ ও জেলার ২নং আসন হিসেবে পরিচিত। জাতীয় পার্টি, জাকের পার্টি ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী থাকলেও তাদের হিসেবের খাতায় রাখছেন না সাধারণ ভোটাররা। সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন ভোটের লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে।
নেতাকর্মী-সমর্থকরা প্রার্থীদের পোস্টার-ব্যানার-ফেস্টুনে গ্রামের রাস্তা-ঘাট, খেলার মাঠ, গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলো, উপজেলার বিভিন্ন স্থানগুলো ছেয়ে দিয়েছেন। চলছে প্রচার-প্রচারণা। প্রার্থীরা দিন-রাত ঘুম হারাম করে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে মরিয়া। ভোটারদের কাছে তুলে ধরছেন উন্নয়নের ফিরিস্তি, দিচ্ছেন রাস্তা-ঘাট নির্মাণের অঙ্গীকার।
ভোর থেকে বিএনপি ও আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ভোটভিক্ষা করতে। প্রতিটি ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী অফিসগুলো সন্ধ্যার পর থাকে জমজমাট। তবে প্রচার-প্রচারণায় বিএনপি থেকে মাঠে অবস্থান আওয়ামীলীগের প্রার্থীর বেশি।
এ (ধামইরহাট-পত্নীতলা) আসনে ১৯৯১ সালে ১ম এমপি নির্বাচিত হন উপজেলার বীরগ্রামের কৃতি সন্তান সাবেক মুন্সেফ শহীদুজ্জামান সরকার। নির্বাচিত হবার পর পরই বিএনপি সরকার গঠন করায় পরবর্তীতে তিনি পদত্যাগ করলে উপনির্বাচনে বিএনপি’র প্রার্থী সামসুজ্জোহা খান পর পর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে নির্বাচিত হন। মেয়াদ শেষে ২০০৬ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তথা সামরিক সরকার ক্ষমতায় আসে।
২০০৮ সালে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীকে প্রায় ৫০ হাজার ভোটে পরাজিত করে ২য় বারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন হুইপ শহীদুজ্জামান সরকার। পরে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁ-২ আসনে কোন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় ৩য় বারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে হুইপের দায়িত্ব পালন করছেন।
সাধারণ ভোটার পালকি’র সম্পাদক কবি অরিন্দম মাহমুদ বলেন, ধামইরহাট উপজেলায় ১টি সরকারি কলেজ, স্কুল, ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) ও নিজ জেলায় ১টি মেডিকেল কলেজ পেয়েছি। আমরা উন্নয়নের ধারাবাকিতা চাই। তাই আগামীতে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার কোনো বিকল্প নাই।
অপরদিকে উমার ইউনিয়নের নারী ভোটার আরজিনা বেগম বলেন, জীবনে ১ম বার ভোট দিতে যাবো, তাই বিকল্প প্রার্থী ও পরিবর্তন দেখতে চাই।
২টি পৌরসভা ও ১৯টি ইউনিয়ন নিয়ে নওগাঁ-২ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২২ হাজার ৮৩ জন। এর মধ্যে পত্নীতলা উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৯১ জন। এর মধ্যে মধ্যে পুরুষ ৮৯ হাজার ৭৫৯ জন এবং মহিলা ৮৯ হাজার ৬৩২ জন। অপরদিকে ধামইরহাট উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৪২ হাজার ৬৯২ জনের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭১ হাজার ৩৫৯ জন এবং নারী ভোটার ৭১ হাজার ৩৩৩ জন।
ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাকিরুল ইসলাম বলেন, ধামইরহাট উপজেলায় নির্বাচনী পরিবেশ অনেক ভাল আছে। প্রার্থীরা সমানভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে নির্বাচনে ৫০টি কেন্দ্রের মধ্যে অধিকাংশ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ হলেও নির্বাচন সুষ্ঠুভাবেই পাড়ি দিতে আমরা প্রস্তুত আছি।