নিজস্ব প্রতিনিধি ।।
আজ শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর ২০১৮) সকাল ৯.৩০ মিনিটে সৃজন সাহিত্য সংগঠনের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সৃজন চিন্তা দ্বিতীয় সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট কবি, এডভোকেট হারুনুর রশিদ খান। প্রধান অতিথি ছিলেন চিনাইর বঙ্গবন্ধু কলেজের অধ্যাপক, অত্র সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা, বিশিষ্ট কবি মহিবুর রহিম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন শালগাও স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ শামছুজ্জামান আশরাফী, মেজর (অব.) মোবাশ্বিরুল ইবাদ। আলোচনা ও সাহিত্য পাঠে অংশ নেন পৌর কলেজের সাবেক প্রভাষক কবি আবদুল মান্নান রিপন, পথিক টিভির কর্ণধার লিটল হোসাইন জিহাদ, সোনালী ব্যাংক লিঃ ব্যবস্থাপক মো. মাজহারুল ইসলাম, কবি গোলাম মোহাম্মদ মোস্তাফা, রিয়াজুল মোর্সেদ মোয়াজ, কবি মো. জামাল উদ্দিন, মীর আরাফাত, মুহাম্মদ আলী আশরাফ, ফাহিম মুনতাসির প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে কবি ও গবেষক মহিবুর রহিম বলেন, মহান বিজয় দিবস বাঙালি জাতির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন। এ ইতিহাস খুব সংক্ষিপ্ত নয়। কেননা ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় বাঙালি এক লড়াকু জাতি। ইতিহাসের সব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে তাকে আজকের অবস্থানে আসতে হয়েছে। মাত্র নয় মাসে একটি নিয়মিত বাহিনীকে পরাস্ত করে স্বাধীনতার সূর্যকে ছিনিয়ে আনতে হয়েছে। এর জন্য ত্রিশ লক্ষ মানুষকে আত্মাহুতি দিতে হয়েছে। দু’ লক্ষ মা-বোনকে হারাতে হয়েছে সম্ভ্রম। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য নেতৃত্বে এ বিজয় অর্জন সম্ভব হয়েছে। এ ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের যথাযথভাবে পৌঁছে দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঋত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হলে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে ভূমিকা নিতে হবে। সৃজন চিন্তার মতো সাহিত্য পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশ করতে হবে। অপসংস্কৃতি, মাদক, জঙ্গিবাদ রোধ করতে হলে সংগীত ও সাহিত্য চর্চায় তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। যা সময়ের অন্যতম দাবি। তিনি বলেন, সাহিত্যচর্চা একটি সাধনার বিষয়। এ সাধনায় অল্প সময়ে সাফল্য অর্জন সম্ভব নয়। বৈজ্ঞানিক, দার্শনিকের মতোই সাহিত্যের সাধনা জীবনভর চালিয়ে যেতে হয়। এর জন্যে আমাদের পড়তে হবে বই। বইয়ের চেয়ে মহৎ কোন উপাদান নেই যা আমাদের মনের খোরাক জোগাতে পারে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি কবি, এডভোকেট হারুনুর রশিদ খান বিজয়ের মাসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সৃজন চিন্তা দ্বিতীয় সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করে বলেন, দেশ ও জাতির উন্নয়নে সাহিত্য সাধনার প্রয়োজন অত্যন্ত। সমাজের পরিবর্তন ও পরিবর্ধনে আমাদের কাজ করতে হবে। সৃজন সাহিত্য সংগঠনের প্রতি আমার ভালবাসা ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান আশরাফী বলেন, সৃজন সাহিত্য সংগঠনের এ অনুষ্ঠানে এসে আমার অনেক ভাল লেগেছে। আশা করি এ সংগঠন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাহিত্য সংস্কৃতির উন্নয়নে অনেক ভূমিকা রাখবে। এর সংগঠক সৈয়দ মোনাব্বি আহমেদ তনন অনেক পরিশ্রম করে কাজ করছে। তার মাধ্যমে সৃজন চিন্তা আরও এগিয়ে যাবে।
বিশেষ অতিথি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি মেজর (অবঃ) মোবাশ্বিরুল ইবাদ বলেন, সৃজন সাহিত্য সংগঠনের এত সুন্দর-ভাল উদ্যোগ আমাকে মুগ্ধ করেছে। তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, যুদ্ধ কী? হয়তো আমাদের নতুন প্রজন্ম জানেন না। আমরা যারা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বুলেট প্রতিহত করেছি এবং যারা প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশকে চূড়ান্ত বিজয় এনে দিয়েছে তারাই জানেন। আমাদের প্রত্যেকের মাঝেই দেশপ্রেম থাকতে হবে। এখন বিজয়ের মাস এই চেতনাকে ধারণ করে সৃজন চিন্তা এগিয়ে যাবে, এগিয়ে যাবে সৃজন সাহিত্য সংগঠন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, সৃজন চিন্তার সম্পাদক সৈয়দ মোনাব্বির আহমেদ তনন।