ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি ।।
নওগাঁর ধামইরহাটে সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষা কমিটির সদস্য উর্ধতন মহলে অভিযোগ প্রদান করেছেন প্রধান শিক্ষক ও পরীক্ষক রেজিনা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা অর্জুনপুর গ্রামের ব্যবসায়ী ওমর ফারুক জানান, তার ছেলে ২০১৮ সালের ৫ম শ্রেণির পরীক্ষার্থী তাওসিফ আহমদ (১১১১) ইসলামকে পলাশবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজিনা ইয়াসমিন পরীক্ষার খাতায় বিশেষ চিহ্ন দিতে বলেন। শুধু তাই নয় অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদেরকেও এই নির্দেশনা প্রদান করেন।
কিন্তু পরীক্ষা শেষে মূল্যায়নকালে প্রধান শিক্ষক রেজিনা ইয়াসমিন বাংলা বিষয়ের প্রধান পরীক্ষক হওয়ার সুবাদে মূল্যায়ন সময়কালীন তার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিশেষ চিহ্ন দেয়া খাতাগুলো তিনি অন্যান্য বিষয়ের পরীক্ষকদেরকে নাম্বার বেশি দেয়ার জন্য বলেন।
এক পর্যায়ে লক্ষণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও ইংরেরি বিষয়ের পরীক্ষক সাকেরা বানু বিষয়টি দেখে ফেলেন। ফলাফল ঘোষণা হলে অনেক দুর্বল ছেলেদের ফলাফল জিপিএ-৫ হলেও ফারুক হোসেনের ছেলে মেধাবী ছাত্র তাওসিফ আহমেদ ফল ৪.৮৩ হয়। শুধু তাই নয় নওগাঁ শাহীন ক্যাডেটের শিক্ষার্থী রাউফ রায়িসকে (১১১২) অবৈধভাবে ভর্তি দেখিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেন। ওই শিক্ষার্থী স্কুলে কোন ক্লাস না করে শুধুমাত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে যা অনিয়ম। প্রধান শিক্ষক রেজিনা ইয়াসমিন রাউফ রাইসসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীদেরকে বলেন যে, ২০১৮-এর ৮ সংখ্যাকে ভরাট করে লিখবে, জিপিএ-৫ করে দেয়ার দায়িত্ব আমার।
এই সব অনিয়মের অভিযোগে উপজেলা প্রাথমিক/এবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সদস্য আবু সালেহ জানান। তিনি আরো বলেন, উত্তরপত্র মূল্যায়নে ৯২ নম্বর পেলেও তা ৯৮ নম্বর দিতে বাধ্য করেন প্রধান শিক্ষক রেজিনা ইয়াসমিন।
ওই বিদ্যালয়ের ইশরাত জাহান দিবা (ম ১১১৭) ৫৯০ নম্বর পেয়েছে, যা অবিশ্বাস্য। নওগাঁ জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা এই অনিয়মের বিষদাঁত ভেঙ্গে দিতে চাই এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও পরীক্ষক রেজিনা ইয়াসমিনকে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রাথমিক/এবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরিচালনা কমিটির সভাপতি গনপতি রায় বলেন, অভিযোগ ও ঘটনার সত্যতা পেলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে, একচুলও ছাড় দেয়া হবে না। প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামসহ অনেক শিক্ষক সমাজ এই দুর্নীতির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।