আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
লক্ষ-কোটি ভক্ত-সমর্থকদের কাঁদিয়ে চিরবিদায় নিয়েছেন বাংলাদেশের রাজনীতির প্রবাদপুরুষ সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তার মৃত্যুতে হাহাকার শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে, জনসাধারণের হৃদয়েও পড়েছে শোকের ছায়া। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিকের মৃত্যু পরবর্তী সময়ে হঠাতই আলোচনায় এসেছেন তার একমাত্র কন্যা সৈয়দা রীমা ইসলাম।
বাবার কফিনের পাশে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছেন এমন একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। গত কয়েকদিন ধরেই ফেসবুকের টাইমলাইনে ঘুরছে আশরাফকন্যার আবেগঘন ছবিটি। ছবিতে দেখা যায়, রীমা ইসলাম ও অন্যান্যরা গাড়ি থেকে সৈয়দ আশরাফের কফিনটি নামাচ্ছেন। রীমা অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে আছেন দূরে। বিভিন্নজন ছবিটি শেয়ার করে আশরাফকন্যাকে সমবেদনা জানাচ্ছেন।
গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে জয়ী হন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তবে একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে শপথ নেয়া হয়নি তার। অন্যদের শপথের দিনেই গত ৩ জানুয়ারি ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি। দীর্ঘদিন যাবৎ ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগে ৬৮ বছরে চিরবিদায় নেন এই আ’লীগ নেতা।
সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুর পর আলোচনায় এসেছে- কী করবেন রীমা। তার আর কোনো ভাই-বোন নেই। ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর হারিয়েছেন মা শীলা ইসলামকে। আর এবার হারালেন বাবা সৈয়দ আশরাফকে। রীমা সেখানেই এইচএসবিসি ব্যাংকে চাকরি করেন। সম্পূর্ণ একা হয়ে পড়া রীমা কি দেশেই থাকবেন নাকি ফের বিদেশ পাড়ি জমাবেন?
অনেকে মনে করেন, সৈয়দ আশরাফ চাইতেন না, তার একমাত্র সন্তান রাজনীতিতে আসুক। এ কারণেই তিনি কন্যাকে দেশে আনেননি। স্বাধীনভাবে নিজের মতো করে জীবন গঠন ও পেশা গ্রহণের সুযোগ দিয়েছেন তিনি মেয়েকে। মেয়েকে রাজনীতির সংস্পর্শে রাখার চেষ্টা করেননি কখনো।
তবে, সেই বাস্তবতা এখন আর নেই আশরাফ তনয়ার সামনে। জনতার যে উচ্ছ্বাস সৈয়দ আশরাফকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে, রীমাকে ঘিরেও কিশোরগঞ্জে একই ঢেউ উঠবে বলে মনে করেন বিশিষ্টজনেরা। সমর্থকেরাও চাচ্ছেন রীমা ইসলামকে যেন উপ-নির্বাচনে প্রার্থী করা হয়। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমগুলোতেও তাকে সমর্থন জানিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন অনেকেই।
পারিবারিক সূত্র জানায়, রীমা ইসলাম এখনো শোকাচ্ছন্ন। তবে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা রয়েছে উচ্চশিক্ষিত-মেধাবী এই তরুণীর। ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি এখন কোনও সিদ্ধান্ত নেননি।
স্থানীয় এক আ’লীগ নেতা জানান, সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুর পর পিতৃ-মাতৃহীন এতিম রীমার দায়িত্ব শুধু পরিবারেরই নয়, পুরো দেশের। সব মানুষ তার পাশে আছে। তদুপরি সৈয়দ আশরাফের অবর্তমানে আওয়ামী লীগ প্রধান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন তার মুরুব্বী ও অভিভাবক। রীমা নিশ্চয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন এবং সঠিক পদক্ষেপ নেবেন।
সূত্র : যমুনা নিউজ, ৯ জানুয়ারি ২০১৯